খুলনার দাকোপে সবজি চাষে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্ত হতে চলছেন তপক মন্ডল


প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৩, ৪:১২ অপরাহ্ন / ১৬৯
খুলনার দাকোপে সবজি চাষে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্ত হতে চলছেন তপক মন্ডল
মোঃ শামীম হোসেন – খুলনা প্রতিনিধিঃ-
খুলনার দাকোপ উপজেলার লাউডোব ইউনিয়নের লাউডোব গ্রামের তপক মন্ডল বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্ত হতে চলেছে, সবজি চাষের মাধ্যমে। তার সবজির ক্ষেত এখন স্বাবলম্বী হওয়ার মূল চালিকাশক্তির আশ্রয়স্থল। সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, ৩ নং লাউডোব ইউনিয়নের লাউডোব গ্রামের তপক মন্ডল ২০১৬ সালে মাস্টার্স শেষ করেছে খুলনার আযম খান সরকারি কমার্স কলেজের মার্কেটিং বিভাগ থেকে। চাকুরি খুঁজতে খুঁজতে হয়রান হয়ে তার বাবার ৮৪ শতক জমির বসত বাড়িতে গড়ে তুলেছেন সবজির খামার। তাতেই বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্ত হতে চলেছে। বর্তমানে তার খামারে ৫০০ বেগুন গাছে বেগুনের দেখা মিলেছে। ২০০ বর্ষাকালীন টমেটো গাছে ফুল ও ফল আসতে শুরু করেছে। ২০০ অধিক উচ্ছে গাছে ফল দিচ্ছে। তার সবজির ক্ষেতে প্রায় ২০০ অফসিজন তরমুজ গাছ আছে যা আশ্বিন মাসে বড় পূজার সময় বিক্রি করতে পারবে। তখন দাম অনেক বেশী পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন তপক। ৫০টি লাউ গাছে লাউ হচ্ছে যা ক্ষেত থেকে প্রতি পিচ ৪০-৪৫ টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়াও মিষ্টি কুমড়া, ঢেঁড়শ, কাঁচামরিচ, পুইশাক, লালশাক, ডাটা শাক, কুসি, ধন্দুল, ঝিঙাসহ বিভিন্ন প্রজাতির সবজি চাষ করছে। সবজির ক্ষেত থেকে প্রতিদিন পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করছে। এ বছর খরচ বাদে ২ লাখ টাকার অধিক মুনাফা আয় হবে বলে তপক মন্ডল ধারণা করছে। জমিতে পুকুর খনন করে তার মধ্যে মাছের চাষ করছে। পাশাপাশি সবজির ক্ষেত। নিজের পরিবারের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি সবজির ক্ষেতে এখন থেকে প্রতি দিন বিভিন্ন প্রজাতির সবজি বিক্রি হচ্ছে। কথা হয় তপক মন্ডল এর সাথে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, প্রতিদিন ভোর হওয়ার সাথে সাথে খামারে যাই বাড়ি লাগোয়া হওয়ায় সারাদিনই খামারে কাজ করি। চাকরির পিছনে ছুটে অযথা সময় নষ্ট না করে খামার করেছি। আমার খামার সম্পূর্ণ রাসায়নিক মুক্ত। আমি নিজেই জৈব সার (ভার্মি কম্পোষ্ট) এবং জৈব বালাইনাশক (নিম তেল, মেহগনি ফলের নির্যাস এবং তামাক জল) উৎপাদন করে নিজের খামারে ব্যবহার করে নিরাপদ সবজি উৎপাদন করার চেষ্টা করছি। আমার সবজির ক্ষেত থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন প্রজাতির সবজি বিক্রি হচ্ছে তাতে আমি এ মৌসুমে খরচ বাদে ২ লাখ টাকার বেশি লাভ করবো এতে কোন সন্দেহ নেই। এছাড়া দাকোপ উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর থেকে কর্মকতাদের পরামর্শ ও সহায়তা প্রদান আমার সবজির চাষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এ ব্যাপারে কথা হয় দাকোপ উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ শফিকুল ইসলাম এর সাথে তিনি বলেন, তপক মন্ডল সবজির ক্ষেত করার জন্য প্রথমে সবজি চাষের উপর (পুষ্টি বাগ) ট্রেনিং নিয়েছে। তারপর সবজির ক্ষেতে কাজ শুরু করেছে। বর্তমানে তার সবজি ক্ষেত থেকে প্রতিদিন ভিন্ন প্রজাতির সবজি বিক্রি হচ্ছে এবং সে লাভবান হবে। তার দেখাদেখি যে কেউ চাইলে শুরু করতে পারে। তাদেরকেও অবশ্যই সহযোগিতা করবো।