শেষের পথে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইন্স প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ। 


প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ১৫, ২০২২, ৫:১২ অপরাহ্ন / ৬৫৮
শেষের পথে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইন্স প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ। 

শেষের পথে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইন্স প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ। 
বরিশাল : জেলায় প্রায় ৮০ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইন্স। প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ প্রায় ৯০
ভাগ শেষ করেছে বরিশাল গণপূর্ত অধিদপ্তর। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়,
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন জননিরাপত্তা বিভাগের উদ্যোগে
বরিশাল নগরীর রূপাতলী এলাকায় নির্মাণ করা হচ্ছে এ “মেট্রোপলিটন
পুলিশ লাইন্স” প্রকল্পটি। প্রায় ৮০ কোটি ৬০ লাখ ৯৯ হাজার টাকা ব্যয়ে
নির্মাণ করা হচ্ছে এ “মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইন্স” প্রকল্পটি। বর্তমান
সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে (জিওবি) বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পটি আগামী
২০২৩ সালের জুন মাসে হস্তান্তর করা হবে বলে আশা প্রকাশ করছে
গণপূর্ত অধিদপ্তর। সংশ্লিষ্ট সূত্র আরো জানায়, বরিশাল গণপূর্ত
অধিদপ্তর বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইন্স প্রকল্পটি সঠিক সময়ে
সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে প্রকল্পটির
ফিনিসিং-এর কাজ চলছে। প্রকল্পটির আওতায় রয়েছে যথাক্রমে, একটি ৪
তলা বিশিষ্ট প্রশাসনিক ভবন, পৃথকভাবে ৬ তলা বিশিষ্ট তিনটি কোয়ার্টার
ভবন, একটি এমটি গ্যারেজ, একটি ৩ তলা বিশিষ্ট অস্ত্রাগার কমপ্লেক্স,
একটি ৬ তলা বিশিষ্ট মাল্টিপারপাস ভবন, একটি ৬ তলা বিশিষ্ট ব্যরাক
ভবন, একটি ৩ তলা বিশিষ্ট সার্ভিস ব্লক ও ৩ তলা ভিতের উপর একটি ১
তলা বিশিষ্ট আধুনিক পুলিশ লাইন্স জামে মসজিদ। এছাড়াও, বাস্তবায়নাধীন
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইন্স প্রকল্পটিতে রয়েছে চলাচলের
সুবিধার্থে প্রায় ২৭ হাজার ৪৬২ বর্গমিটার অভ্যন্তরীণ রাস্তা নির্মাণ
কাজ। সূত্র জানায়, প্রত্যাশী সংস্থা বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ
কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে প্রকল্পটির ৪ তলা বিশিষ্ট একটি প্রশাসনিক ভবন,
৬ তলা বিশিষ্ট একটি ব্যরাক ভবন ও মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইন্স জামে
মসজিদটি ব্যবহার করছে। এ বিষয়ে বরিশাল বিভাগীয় গণপূর্ত অধিদপ্তরের
নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কামরুল হাছান বলেন, বর্তমান সরকার বরিশাল
বিভাগের ৬টি জেলায় ব্যপক উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন।

পাশাপাশি বিগত যে কোন সরকারে তুলনায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বরাদ্ধ ও
প্রকল্প অনুমোদন দিচ্ছে। তার প্রতিফলন প্রান্তিক জনগোষ্ঠীসহ প্রায়
প্রতিটি নাগরিক ভোগ করছেন। তিনি আরো বলেন, বরিশাল মেট্রোপলিটন
পুলিশ লাইন্স প্রকল্পটি আগামী জুন মাসে প্রত্যাশী সংস্থা মেট্রোপলিটন
পুলিশ কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করার জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছে
বরিশাল গণপূর্ত অধিদপ্তর। প্রত্যাশী সংস্থার চাহিদা অনুযায়ী এরইমধ্যে
মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইন্স জামে মসজিদ, ৩ তলা বিশিষ্ট সার্ভিস ব্লক, ৩
তলা বিশিষ্ট অস্ত্রাগার কমপ্লেক্স, ৬ তলা বিশিষ্ট ব্যরাক ভবন, ৬ তলা
বিশিষ্ট কোয়ার্টার ভবন ও প্রসাশনিক ভবন হস্তান্তর করা হয়েছে।
প্রকল্পটির অবশিষ্ট কাজগুলো ফিনিসিং পর্যায়ে রয়েছে।এ প্রসঙ্গে
আলাপকালে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম
বিপিএম (বার) কে বলেন, বর্তমান সরকার প্রধানের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়
খুব অল্প সময়ের মধ্যে প্রকল্পটির কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। এছাড়াও
‘পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্ট’, ‘কমিউনিটি ব্যাংক’ প্রতিষ্ঠাসহ পুলিশ বাহিনীর
উন্নয়নে এবং কল্যাণে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন বর্তমান সরকার।
তিনি আরো বলেন, নবনির্মিত বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইন্স’র
কার্যক্রম সম্পন্ন রূপে শুরু বা উদ্বোধন করতে চলছে ব্যপক প্রস্তুতি।
13/12/2022
01620849601

“বিএনপির মুখে গণতন্ত্র-বিচারবহির্ভূত হত্যার কথা মানায় না: হাসনাত আব্দুল্লাহ”

বরিশাল: পাবর্ত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক আলহাজ্ব আবুল
হাসনাত আব্দুল্লাহ এমপি বলেছেন, তৃণমূলই আওয়ামী লীগের শক্তি। আওয়ামী লীগ
বহিরাগত কাউকে নিয়ে ক্ষমতা দখল করে না, আওয়ামী লীগ কোনো অন্ধকার পথে
ক্ষমতায় আসে না। এ ধরনের কোনো ইতিহাসই আওয়ামী লীগের নেই। আওয়ামী লীগ
হচ্ছে জনগণের দল, আর আওয়ামী লীগ অর্থই হচ্ছে জনগণ। ২২ তম জাতীয় কাউন্সিল
অধিবেশন সফল করার লক্ষ্যে সোমবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে বরিশাল ক্লাবে
অনুষ্ঠিত বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় সভাপতির বক্তব্যে
এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় তিনি আরও বলেন, আমাদের এখানে বসন্তের কোকিল
কেউ নেই, যারা রয়েছেন দীর্ঘদিন আমার সঙ্গে ছিলেন। আন্দোলন সংগ্রাম করে, জেল
খেটে, মারধর খেয়ে এ দলটাকে টিকিয়ে রাখছেন। তাই তৃণমূলের আপনাদের কাউকে নতুন
করে কিছু বুঝাতে চাই না। আর এই পোড় খাওয়া নেতা-কর্মীরা যদি তৃণমূল পর্যায়ে নামে
তাহলে আমার মনে হয় না কোনো শক্তি আছে বরিশাল বিভাগে আমাদের পরাজয় ঘটাবে।
সামনে নির্বাচন, বরিশাল সদরের সিট আমাদের পেতে হবে, যেই নৌকা প্রতীক পাবে
তার পক্ষে আপনারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবেন।আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয়
কার্যনির্বাহী কমিটির সিনিয়র এই সদস্য বলেন, যারা এ দেশটার স্বাধীনতাই মানেনি
কোনোদিন, তারা ষড়যন্ত্র করে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ক্ষমতায় এসেছে।
হ্যাঁ-না ভোট দিয়েছে। টিকে থাকার জন্য জেলখানায় বহু লোক হত্যা করে, বিনা কারণে
বহু সেনা কর্মকর্তা-সেনা সদস্যকে ফাঁসির কাষ্টে ঝুলিয়ে বিচার বহির্ভূত হত্যা
করেছে। এখন তারাই গণতন্ত্র হত্যার কথা বলছে। আপনাদের উপলব্ধি করতে হবে
গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে এই বিএনপি-জামায়াত জোট। না হলে একজন নির্বাচিত
রাষ্ট্রপতিকে রাতের অন্ধকারে হত্যা করলো কীভাবে। আর বিচার বহির্ভূত
হত্যাকাণ্ডের কথা বলছেন, ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে স্ব-পরিবারে হত্যা,
আমার নাবালক শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। আমি কোনোদিন বিচার চাইতে যেতে পারিনি,
আইন করে সেটাও বন্ধ করে দিয়েছিল।আওয়ামী লীগ সংসদীয় ও স্থানীয় সরকার
মনোনয়ন বোডের্র এই সদস্য বলেন, সামনে দুটি নির্বাচন। সিটি করপোরেশনের
নির্বাচন হয়তো জুলাই আগস্টে হবে, তারপর জাতীয় সংসদ নির্বাচন। যদি এখানে নৌকা
বিজয় লাভ না করে, আর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন না করে, শেখ হাসিনা যদি

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে না পারেন তাহলে মনে রাখবেন একজনও নিজের
এলাকায় থাকতে পারবেন না। কারণ আমরা ২০০১ সাল দেখছি। খুলনায় ৭৫ বছরের
মঞ্জুরুল ইমামকে রিকশার ওপর গুলি করে মেরেছে। বরিশাল কলেজের ভিপি ফারুককে
ইটভাটায় নিয়ে রড ঢুকিয়ে নৃশংসভাবে মেরেছে। গাজীপুরে আহসান উল্লাহকে মেরেছে,
বগুড়ায় মমতাজ ভাইকে মেরেছে, গৌরনদীতে বুলেটকে মেরেছে। বরিশাল জেলা আওয়ামী
লীগের এই সভাপতি বলেন, এদেশে জঙ্গি-সন্ত্রাস সৃষ্টি করছে বিএনপি। দুর্নীতিতে ৫
বার প্রথম স্থান করছে বিএনপি, যেটা আমাদের কথা না আন্তর্জাতিক পত্রপত্রিকার
সার্ভেতে এটা বলছে। তাই এদের মুখে গণতন্ত্রের কথা শোভা পায় না। বিচারবহির্ভূত
হত্যার কথা শোভা পায় না। তিনি বলেন, আমি বিরোধী দলের এমপি ছিলাম, পাঁচ বছর
এলাকায় আসতে পারিনি। ওরা এতো নৃশংস! আমার পাঁচ বছরের যে সংসদীয় কার্যক্রম
তা সব ওরা করছে। কীসের গণতন্ত্র ওদের কাছে? তিনি আরও বলেন, আমার উত্থান
তৃণমূল থেকে। সুতরাং তৃণমূলে আপনারা যারা রয়েছেন, তারা যদি সক্রিয়ভাবে দলের
পক্ষে নামেন তাহলে আল্লাহর রহমতে কোনো শক্তি নেই আমাদের পরাজিত করবে।
এরা বিভিন্ন প্রপাগাণ্ডা করছে, বিদেশিদের কাছে যাচ্ছে, লবিস্ট ঠিক করছে। এরা
সরকারকে উৎখাত করতে চায়। সুতরাং আমাদের তৃণমূল পর্যায়ের শক্তি নিয়ে এটাকে
মোকাবিলা করতে হবে। এখানে যদি পিছুপা হন, তাহলে মনে রাখবেন আজ স্বাধীনতার
চেতনাই বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আর সন্তানই বলেন, কিছুই ওরা রাখবে না। আমার
অনুরোধ ভুল বোঝাবুঝি বাদ দিয়ে ঐক্যবদ্ধ হই। কে কি পাইলাম না পাইলাম, সে হিসেব
করার সময় নয়, সবকিছু ভুলে ঐক্যবদ্ধ হই। মানবতার মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে যা করছেন, সেই ঋণ শোধ করতে হলে
নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে তাকে জয়যুক্ত করতে হবে। সেই সঙ্গে উন্নয়নের
এ ধারাকে অব্যাহত রাখতে হলে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে শেখ হাসিনার পতাকা তলে
থাকতে হবে। সভায় বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন ইউনিটের
নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
13/12/2022
01620-849601

“বরিশালে অনিয়ন্ত্রিত শব্দ দূষণে অতিষ্ঠ নগরবাসী”
বরিশাল : উচ্চ মাত্রার হর্ন ব্যবহার রোধে আইনে কড়াকড়ি থাকলেও বরিশাল নগরীতে তা উপেক্ষিত।
এমনকি ট্রাফিক বক্স, পুলিশ চেকপোস্টের সামনে দিয়ে প্রতিদিন অসংখ্য গাড়ি অপ্রয়োজেনে উচ্চ
শব্দ ব্যবহার করলেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। সচেতন মহল বলছেন, শব্দ দূষণ
রোধ করা না গেলে বসবাসের উপযোগিতা হারাতে পারে বাংলার ভেনিসখ্যাত এই শহর। এদিকে
চিকিৎসকরা বলছেন, এক দশকের ব্যবধানে হৃদরোগ এবং শ্রবণ সমস্যায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা
বাড়ছে জ্যামিতিক হারে। এর পেছনে শব্দ দূষণ অনেকাংশে দায়ী। যদিও স্থানীয় প্রশাসন দাবি করছে,
উচ্চ শব্দ রোধে অভিযান চলছে। বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ওপর দিয়ে অতিক্রম করা জাতীয়
মহাসড়কসহ নগরীতে প্রতিদিন ন্যূনতম ১ লাখ যানবাহন চলাচল করে বলে ধারণা সংশ্লিষ্ট
দপ্ততরের। যদিও এর সঠিক পরিসংখ্যান নেই ট্রাফিক বিভাগ বা সিটি কর্পোরেশনের কাছে। নগরী
প্রদক্ষিণ করা যানবাহনগুলোর মধ্যে কিছু মোটরসাইকেল, ট্রাক, প্রাইভেট কার ও বাস কারণে-
অকােণে দীর্ঘক্ষণ হর্ন বাজিয়ে থাকে। যানজটের মধ্যেও হর্ন বাজিয়ে বসে থাকতে দেখা যায়।
মোটরসাইকেলের সাইলেন্সার বিশেষ প্রক্রিয়ায় তৈরি করে ভয়ংকর শব্দ তৈরি করে নগরী দাঁপিয়ে
বেড়াচ্ছে এক শ্রেণির বাইকার। খালি অ্যাম্বুলেন্স যত্রতত্র সাইরেন বাজায়। শুধু অ্যাম্বুলেন্স নয়,
অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন মোটরসাইকেল, ট্রাক এবং প্রাইভেট কারে লাগিয়ে বাজানো হয়। এছাড়া
অধিকাংশ মোটরযানে হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহার করে। আবার বাইকচালকরা একসঙ্গে দলবেঁধে
রাস্তায় প্রতিযোগিতায় নেমে বিকট শব্দে হর্ন বাজায়। তখন এলাকায় আতঙ্ক দেখা দেয়। কিন্তু
প্রশাসন এদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয় না। অভিযোগ আছে, হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহারকারীদের
বিরুদ্ধে প্রশাসন মাঝে-মাঝে পদক্ষেপ নিলেও বিক্রয়কারীদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
ফলে হাত বাড়ালেই এসব উচ্চ শব্দ উৎপাদনকারী যন্ত্রাংশ কিনতে পারছে ব্যবহারকারীরা। উচ্চ
শব্দের এমন বেপরোয়া ব্যবহারে বিষিয়ে উঠছে নাগরিকদের জীবন। বিশেষ করে রূপাতলী থেকে সদর
রোড, কাকলির মোড় থেকে জেলখানার মোড়, নথুল্লাবাদ থেকে জেলখানার মোড়, রূপাতলী থেকে
নথুল্লাবাদ, লঞ্চঘাট, পোর্টরোড, চৌমাথা থেকে বটতলা, জীবনানন্দ দাশ সড়ক, নথুল্লাবাদ থেকে
গড়িয়ারপাড় এলাকায় উচ্চ শব্দ ব্যবহার নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞরা এটিকে
সামাজিক বিশৃঙ্খলা বলে অভিহিত করেছেন। তারা বলছেন, উচ্চ শব্দ অনেকের মৃত্যুরও কারণ।
বরিশাল বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তর ২০২১ সালের জরিপের বরাত দিয়ে বলছে, নগরীতে শব্দ দূষণের

মাত্রা সর্বোচ্চ ১৩১ ডেসিবেল পর্যন্ত পাওয়া গেছে। যদিও শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালের নাক, কান ও গলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. মেজবাহ উদ্দিন জানিয়েছেন, শব্দের
স্বাভাবিক সহনীয়তা ৪০ থেকে ৪৫ ডেসিবেল। সেই মাত্রা ৬০ ডেসিবেল হলে মানুষ সাময়িক এবং ১০০
অতিক্রম করলে পুরোপুরি বধির হয়ে যাওয়ার শঙ্কা থাকে। তিনি বলেন, শব্দ ৯০ ডেসিমেল হলে উচ্চ
রক্তচাপ ও কানের সঙ্গে মস্তিষ্কের সংযোগস্থলে আঘাত আসে। এই শব্দের মধ্যে যারা থাকে,
তাদের স্মৃতিশক্তি লোপ পায়, শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। বর্তমানে তরুণরা শখের বশে
মোটরবাইকে যে বিকট শব্দের সাইলেন্সার-হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহার করে তা সাধারণত ৯০
ডেসিবেলের ওপরে। যা মানুষের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ। শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালের শিশু বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. এম আর তালুকদার মুজীব জানিয়েছেন, শব্দ
দূষণে শিশুরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শিশুদের শব্দধারণ ক্ষমতা প্রাপ্তবয়স্কদের মতো না। শিশুদের
পাশে উচ্চ শব্দ করলে বধির হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়া মস্তিষ্কও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। হৃদরোগ
বিশেষজ্ঞ ডা. রনজিৎ খা বলেন, হৃদরোগজনিত সমস্যায় আক্রান্তদের শব্দ দূষণ মারাত্মক ক্ষতি
করে। শব্দ দূষণে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। শুধু মোটরসাইকেলই নয়,
নগরজুড়ে বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করছে। এসব যানবাহন অপ্রয়োজনীয়ভাবে হর্ন বাজায়। এ কারণে
হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। সাগরদী এলাকার বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম বলেন, শহরের বেশ
কয়েকটি এলাকা রয়েছে যেখান থেকে চলাচল করা অসম্ভব। নগরীতে পুলিশকে শুধু মোটরসাইকেলের
কাগজ চেক করতে দেখি। শব্দ দূষণ করে যেসব গাড়ি সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেখি না। আসলে
বরিশাল শহর বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠছে। অন্যান্য দূষণের মতো শব্দ দূষণ মারাত্মক পর্যায়
ধারণ করছে। সদর রোডের বাসিন্দা মাসুদ বলেন, দিন হলে দরজা-জানালা বন্ধ করে রাখতে হয়। আমার
ঘরে শিশুসন্তান আছে। উচ্চ শব্দে ঘুমের মধ্যেও আঁতকে ওঠে। সিঅ্যান্ডবি ১ নং পুল এলাকার
বাসিন্দা আমির হোসেন বলেন, পুলিশ মাঝে মাঝে কিছু অভিযান চালায়। কিন্তু হর্ন থামানোর কোনো
ব্যবস্থা নেয় না। আর পরিবেশ অধিদপ্তরকে জীবনে কোনো দিন অভিযান চালাতে দেখিনি। বরিশাল
মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের উপ-কমিশনার এস এম তানভীর আরাফাত বলেন,
হাইড্রোলিক হর্নের বিরুদ্ধে দুই মাস ধরে অভিযান চলছে। সামনে যেগুলো পাচ্ছি, তাদের বিরুদ্ধে
ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তবে যেখানে ট্রাফিক পুলিশ থাকে না, সেই স্থান থেকে চালালে আমাদের কিছুই
করার থাকে না। পরিবেশ অধিদপ্তর বরিশালের বিভাগীয় পরিচালক আব্দুল হালিম বলেন, শব্দ দূষণ
রোধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। প্রতি মাসে বিভিন্ন জেলায় এই অভিযান পরিচালনা
করা হয়। ইতোমধ্যে বরিশাল, ঝালকাঠি ও পটুয়াখালী জেলায় সাধারণ মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় সভা
করা হয়েছে। এছাড়া বরিশাল জেনারেল হাসপাতাল, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা

প্রশাসকের কার্যালয়, আদালত এলাকা এবং বালিকা বিদ্যালয় স্কুল এলাকা নীরব এলাকা হিসেবে
ঘোষণা করা হয়েছে।
13/12/2022
01620849601