রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে গরু খামারের আড়ালে চলছে অন্যকারবার।


প্রকাশের সময় : মার্চ ৪, ২০২৩, ৬:০০ অপরাহ্ন / ৫২০
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে গরু খামারের আড়ালে চলছে অন্যকারবার।
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে গরু খামারের আড়ালে চলছে অন্যকারবার।
রাজশাহী প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর গোদাগাড়ী সীমান্ত এলাকার একশ্রেণীর গরু খামার মালিকের বিরুদ্ধে চোরাচালান ও মাদক কানেকশনের গুঞ্জন উঠেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সীমান্ত এলাকার চোরাকারবারি ও মাদক ব্যবসায়ীরা নতুন কৌশল অবলম্বন করছে। তারা নিরাপদ রুট হিসেবে বেছে নিয়েছে সরকারি রাজশাহী দুগ্ধ ও গবাদি উন্নয়ন খামারসহ রাজাবাড়ি এলাকার কিছু ব্যক্তিমালিকানাধীন খমার বলে আলোচনা রয়েছে। আলোচনার শীর্ষে রয়েছে, তরুণ বয়সী একশ্রেণীর রাজনৈতিক নেতা ও জনপ্রতিনিধি যাদের রাজনৈতিক জীবনটায় পালা বদলের। যারা এক সময় পদ্মা নদীতে মাছ শিকার ও অন্যর জমিতে কামলা দিয়ে জীবীকা নির্বাহ করেছে। অথচ মাদক চোরাচালান, হুন্ডি ব্যবসা ও চোরাপথে ভারত থেকে প্রসাধনী সামগ্রীর এনে শত শত কোটি টাকার মালিক হেয়েছে। এদের আয়ের উৎস্য কি তার অনুসন্ধান সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে। স্থানীয়রা বলছে, কৃষকেরা নিজ হাতে গরু লালনপালন করেও লোকসানে পুঁজি হারাচ্ছে। অথচ একশ্রেণীর গরু খামারি জনবল নিয়োগ দিয়ে গরু লালনপালন করে বিপুল অঙ্কের টাকা মুনাফা করছে-এর হেতু কি ? সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষের মুখে আলোচনা রয়েছে এরা বিশেষ কায়দায় গরুর পেটে ইয়াবা-হেরোইন দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাচার করে সম্পদের পাহাড় গড়ছে।
এদিকে সরকারি খামার কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রায় ১৩২ একরের এলাকাজুড়ে খামারের প্রায় ১৮টি স্থানে ইটের দেয়াল ভেঙে ফেলা হয়েছে। ফলে অনায়াসে মাদক নিয়ে ঢুকছে কারবারিরা। হাজার কোটি টাকার সম্পদ মাত্র চারজন মিলে পাহারা দেয়ায় সুযোগ নিচ্ছে তারা। দিনে কোনোভাবে সামাল দিতে পারলেও রাতের অন্ধকারে মাদক চালান করছে মাদক কারবারিরা।
সূত্র জানায়, খামারের উত্তরে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়ক, দক্ষিণে পদ্মা নদী। পদ্মা পেরোলেই ভারত সীমান্ত। পূর্ব দিকে ১০০ মিটার দূরে রাজাবাড়ীহাট।ফলে খামারের বিশাল আয়তনের এলাকা মাদক কারাবারিদের জন্য অনন্য রুট হয়ে উঠেছে। কোনোমতে ভারত সীমান্ত থেকে মাদকের চালান খামারের মধ্যে ঢুকলেই পৌঁছে যায় পাশের বাজার অথবা গাড়িযোগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহী শহরে। খামার কর্তৃপক্ষ জানায়, সূর্য পশ্চিম আকাশে হেলে পড়ার আগেই মাদক সেবন ও বিক্রি শুরু হয়। চোখের সামনে মাদকের চালান দেখলেও নিরুপায় তারা। কারণ খামার থেকে গোদাগাড়ী মডেল থানা প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে। পাশের প্রেমতলি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের দূরত্বও প্রায় ১২ কিলোমিটার। ফলে দ্রুত পালিয়ে যায় চোরাকারবারিরা।
সম্প্রতি গত শুক্রবার সরেজমিন দেখা যায়, রাজশাহী দুগ্ধ ও গবাদি উন্নয়ন খামারের দেয়ালঘেঁষা বেশ কয়েকটি টিনের খুপরি ঘর। দেয়ালের কাছে মাটি দিয়ে চলাচলের রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া পুরো সীমানাপ্রাচীরের প্রায় ১৮টি স্থানের ইট খুলে রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। এসব ফোকর দিয়ে বহিরাগতরা অবাধে প্রবেশ করছে চারণভূমিতে। নিরুপায় হয়ে বাঁশ ও বরইয়ের ডাল দিয়ে বেড়া দেয়া হয়েছে। তারপরও খামারের চাষ করা ঘাস কেটে ফেলা হচ্ছে। চুরি হচ্ছে খামারের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ও জিনিসপত্র। এ খামারে সম্পদের পরিমাণ প্রায় হাজার কোটি টাকা কিন্তু পাহারাদার মাত্র একজন। তার সঙ্গে দৈনিক মজুরিভিত্তিক তিন শ্রমিক দিয়ে খামারের একটি অংশ পাহারা দেয়া গেলেও বিশাল চারণভূমি রয়ে গেছে অরক্ষিত।
এদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক সূত্র বলছে, বিশাল খামারের পাশে পদ্মা। আর পদ্মার ওপারে ভারতীয় সীমান্ত হওয়ায় রাতের বেলা খামারে সেভাবে পাহারা বসানো যাচ্ছে না। এরই সুযোগ নিচ্ছে মাদক চোরাচালানিসহ অপরাধীরা। এক্ষেত্রে খামারের জনবল বৃদ্ধির পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
সংশ্লিষ্টরা বলছে, মাদক চালান নিয়ন্ত্রণ করতে ও খামারের নিরাপত্তায় জনবল নিয়োগের জন্য প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে অনুরোধ জানিয়েছে তারা। একই সঙ্গে ক্যাম্পসহ সশস্ত্র আনসার সদস্য মোতায়েনের আবেদনও পাঠানো হয়েছে দপ্তরে। ২০২০ সালের ৮ নভেম্বর এ আবেদন পাঠান খামার ব্যবস্থাপক মহাম্মদ আব্দুল হামিদ। এতে উল্লেখ করা হয়, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনভাতার প্রায় ২০ লাখ টাকা আসে খামারে। দুধ, ঘাস, গোবর ও বাতিলকৃত গবাদিপশু বিক্রির প্রায় ২৫ লাখ টাকা জমা হয় ট্রেজারিতে। পুরো আর্থিক লেনদেনে নিরাপত্তাহীনতায় থাকেন খামার সংশ্লিষ্টরা। তাছাড়া দাপ্তরিক কাজ ও গোখাদ্য টেন্ডারসহ বিভিন্ন নিলাম হয় এখানে। ওই সময় বহিরাগতরা খামার চত্বরে প্রবেশ করে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। এতে হুমকিতে পড়েন খামারের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। থানা ও ফাঁড়ি দূরে হওয়ায় কোনো ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ পৌঁছার আগেই অপরাধীরা বেরিয়ে যায়। এমন ঘটনা ঘটছে অহরহ। থানায় অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার মেলে না।
খামারের উপপরিচালক ডা. আতিকুর রহমান  জানান, বর্তমানে তিনজন কর্মকর্তা, ২৫ জন কর্মচারী ও ২৫ জন দৈনিক হাজিরাভিত্তিক শ্রমিক মিলিয়ে খামারে কর্মরত ৫৩ জন। এর মধ্যে স্থায়ী বা রাজস্ব খাতে ৪৯ পদের বিপরীতে কর্মরত ২৫ জন। এ খাতের বিভিন্ন ক্যাটেগরির ২৪টি পদ শূন্য। দীর্ঘদিন নতুন স্থায়ী জনবল নিয়োগ নেই। দৈনিক হাজিরাভিত্তিক ২৯ পদের বিপরীতে কর্মরত ২৫ জন। এ খাতের পদ খালি তিনটি। ১৯৯৬ সালের পর থেকে দৈনিক হাজিরাভিত্তিক শ্রমিক নিয়োগও বন্ধ। মাঝে আধুনিকীকরণ প্রকল্প থেকে ছয়জন এবং দ্বিতীয় প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প থেকে ৩৩ জন জনবল এসেছে খামারে। যদিও এখানো অস্থায়ী এ রাজস্ব খাতের পদ খালি রয়েছে ৪৮টি। খামারের দৈনিক মজুরিভিত্তিক শ্রমিক হিসেবে ১৯৮৪ সালে যোগ দেন আসলাম উদ্দিন। তিনি জানান, প্রায় ১৬ বছর ধরে তিনি খামারের স্থায়ী পাহারাদার। ভোর ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত একজন পাহারা দেন। আরেকজন পাহারা দেন বেলা ২টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত। বাকি দুজন রাত ১০টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত পাহারায় থাকেন। দিনের বেলা বাইসাইকেলে পুরো এলাকায় নজরদারি করা যায়, কিন্তু রাতে হেঁটেই পাহারা দিতে হয়। এটি খুবই কষ্টসাধ্য। মাঝে মধ্যে পাহারাদারের দায়িত্ব পালন করেন আরেক দৈনিক মজুরিভিত্তিক শ্রমিক রবীন্দ্রনাথ সরকার। তবে তারা বয়স্ক ও সংখ্যায় অল্প হওয়ায় চোখের সামনে কী ঘটছে তার বাইরে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেন না।

জানা যায়, রাজশাহী দুগ্ধ ও গবাদি উন্নয়ন খামার প্রতিষ্ঠা করা হয় ১৯৬৮ সালে। তখন প্রতিষ্ঠানটির নাম ছিল এস্টাবলিস্টমেন্ট অব ডেইরি অ্যান্ড ক্যাটল ব্রিডিং ফার্ম। ১৯৮৪ সালে খামারটি বর্তমান নাম পায়। ওই সময় খামারে পাহারাদারের পদ ছিল তিনটি। ১৯৯২ সালে পাহারাদার ইসাহাক আলী খান মারা যান। তখন পদ নেমে আসে দুটিতে। এরপর ২০১৪ সালে অবসরে যান আরেক পাহারাদার লুৎফর রহমান। সেই পদে নতুন করে আর লোকবল নিয়োগ হয়নি। ফলে স্থায়ী পাহারাদার নেমে আসে একজনে। দুটি প্রকল্প রাজস্ব খাতে গেলেও সেখান থেকে পাহারাদার পদে জনবল পায়নি রাজশাহীর গো-খামার। ফলে দৈনিক মজুরিভিত্তিক তিনজন শ্রমিক যুক্ত রয়েছে খামার পাহারায়। যদিও পালাক্রমে খামার পাহারায় অন্তত নয়জন লোক দরকার। কথা হয় দুগ্ধ ও গবাদি উন্নয়ন খামার শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে। তিনি বলেন, খামারে স্থায়ী পাহারাদারের পদ মাত্র দুটি। একজন অবসরে গেছেন। রয়েছেন আরেকজন। তার সঙ্গে তিনজন দৈনিক মজুরিভিত্তিক শ্রমিক পাহারাদারের কাজ করেন। তারা কেবল খামার চত্বর পাহারা দেন। আগে চারণভূমিতেও দুজন পাহারাদার ছিলেন। লোকবল সংকট থাকায় এখন নেই। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে  রাজশাহী দুগ্ধ ও গবাদি উন্নয়ন খামারের উপ-পরিচালক ডা. আতিকুর রহমান  বলেন, গরুর খামার অর্থাৎ মূল কাঠামো এক জায়গায় এবং গো-চারণভূমি রাস্তার ওপাশে। সীমানাপ্রাচীরের প্রায় ১৮টি স্থানের ইট খুলে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। আমি নিজে রাতে টহল দিই। সীমিত জনবল দিয়ে খামার ও ঘাসের খেত পাহারা দেয়া নিয়ে সমস্যায় পড়েছি। ভেঙে ফেলা দেয়াল বেড়া দিয়ে আটকে রেখেছি। সন্ধ্যা নামার পরপর মাদকের হাট বসে খামারের চারদিকে। তাদের হাতে অস্ত্র থাকে। আমরা নিরুপায়। একদিকে ঢুকে অন্যদিক দিয়ে বের হয়। ঘাস চুরি হয়, শেয়ালে গরুর বাছুরকে আক্রমণ করে, জিনিসপত্র চুরি হয়। এছাড়া ফোকর দিয়ে বহিরাগতরা অবাধে প্রবেশ করে চারণভূমিতে। এসব অপরাধ আগের চেয়ে কিছুটা কমলে জনবল সংকটে তা নির্মূল করা যায়নি। তিনি বলেন, জনবল নিয়োগসহ আনসার ক্যাম্প স্থাপন করা গেলে অনেকাংশে খামারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে। সিসিটিভি ক্যামেরা লাগালেও নিরাপত্তা নেই। কারণ তারা যে ক্যামেরা চুরি করবে না তার গ্যরান্টি নেই।

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির মিলন মেলার আয়োজন করা হয়েছে।

আলিফ হোসেন,তানোরঃ

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে মিলন মেলা আয়োজন করা হয়েছে। জানা গেছে, ৩ মার্চ শুক্রবার উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি সাবিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে এবং সম্পাদক শাজাহান আলী শাহীনের সঞ্চালনায় সাফিনা পার্ক চত্ত্বরে আয়োজিত মিলন মেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাংসদ আলহাজ্ব ওমর ফারুক চৌধুরী।অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন গোদাগাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র আলহাজ্ব অয়েজ উদ্দিন বিশ্বাস, সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য আব্দুর রশিদ, উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম,ভাইস -চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক ও সুফিয়া খাতুন, থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি কামরুল ইসলাম, দেওপাড়া ইউনিয়নের (ইউপি) চেয়ারম্যান বেলাল উদ্দিন সোহেল, মোহনপুর ইউনিয়নের (ইউপি) চেয়ারম্যান খাইরুল ইসলাম, বিশিষ্ট সমাজসেবক এবং তরুণ শিল্পপতি আলহাজ্ব আবুল বাসার সুজন  ও রামিল হাসান সুইটপ্রমুখ।এছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী ও দলীয় নেতাকর্মীগণ। এ সময় উপস্থিতদের উদ্দেশ্যে প্রধান অতিথি বলেন,শিক্ষকেরা হলো আলোর পত্রিকা এবং আলোর দিশারী, সত্যিকারের শিক্ষক তারাই যারা আমাদের ভাবতে সাহায্য করে, শিক্ষকরা জাতির মধ্যে নতুন নতুন ভাবনা সৃষ্টি করবে, ভালো শিক্ষক যিনি হবেন তিনি বুঝিয়ে দিবেন, শ্রেষ্ঠ শিক্ষক সবাইকে বুঝিয়ে ও করে দেখাবেন, মহান শিক্ষক উনি বলেন দেখিয়ে দেন বুঝিয়ে দেন শিখিয়ে দেন ও করে দেখান। আমাদেরকে মনে রাখতে হবে একটি বই একটি কলম একটি শিক্ষক বিশ্বকে পরিবর্তন করতে পারে।

তানোরে অতিরিক্ত সেচ চার্জ আদায়ঃ কৃষকেরা দিশেহারা ।
তানোর, (রাজশাহী) প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর তানোরের পাঁচন্দর ইউনিয়নে (ইউপি) ইলামদহী মাঠে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) গভীর নলকুপ অপারেটর রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে সেচ চার্জের নামে কৃষকের কাছে থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছ। পাঁচন্দর ইউপির জেল নম্বর ৯৩, ইলামদহী মৌজার ২১৫ নম্বর দাগে অবস্থিত গভীর নলকুপের অপারেটর রুহুল আমিন। স্থানীয়রা জানান, ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিনের ঘনিষ্ঠ সহচর রুহুল আমিন ইউপি চেয়ারম্যানের প্রভাব বিস্তার ও কৃষকদের জিম্মি করে সেচ চার্জ আদায়ের নামে রীতিমতো চাঁদাবাজি করছে। এ ঘটনায়  গত ১ মার্চ বুধবার অপারেটরের অপসারণ, স্কীমভুক্ত  কৃষকের মতামতের ভিত্তিতে নতুন অপারেটর নিয়োগ ও সমিতির মাধ্যমে গভীর নলকুপ পরিচালনার  দাবিতে স্থানীয় সাংসদ, বিএমডিএ’র চেয়ারম্যান  ও নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে ডাকযোগে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, স্কীমভুক্ত কৃষকের আপত্তি উপেক্ষা করে অর্থের বিনিময়ে রুহুল আমিন অপারেটর হবার পর থেকে কৃষকদের হয়রানী- দুর্ভোগ বেড়েছে। তিনি ইউপি চেয়ারম্যানের  দাপট দেখিয়ে  ড্রেন মেরামত, লাইনম্যান ভাতা, ট্রান্সফরমার মেরামত, ভোল্টেজ বাড়ানো, নৈশপ্রহরী ভাতা, অফিস খরচ ইত্যাদি নানা অজুহাতে কৃষকদের কাছে থেকে জোরপুর্বক টাকা আদায় করছেন।
এছাড়াও তিনি গভীর নলকূপের আয়-ব্যয়ের কোনো হিসাব কাউকে দেন না। কৃষকদের দীর্ঘদিনের দাবি সমিতির মাধ্যমে গভীর নলকুপ পরিচালনার করা হোক।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্কীমের একাধিক কৃষক বলেন,এই গভীর নলকুপে প্রায় দুশ’বিঘা আলু চাষ হচ্ছে। প্রতি বিঘায় সেচ চার্জ হিসেবে সাড়ে তিন থেকে চার হাজার টাকা করে নেয়া হচ্ছে। তারা বলেন, উপজেলা সেচ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতি বিঘায় সেচ চার্জ এক হাজার টাকা করা হয়েছে। তারা আরো বলেন, রুহুল প্রায় লাখ টাকা খরচ করে অপারেটর হয়ে, এখন সেই টাকা কৃষকের কাছে থেকে আদায় করছেন। কেউ চেয়ারম্যানের ভয়ে প্রতিবাদ করতে পারছে না।
এবিষয়ে জানতে চাইলে অপারেটর
রুহুল আমিন বলেন, কৃষকের অভিযোগ সঠিক নয়। তিনি আরো বলেন, কয়েকবার ট্রান্সফরমার পুড়েছে, এছাড়াও ড্রেন মেরামতসহ নানা কাজে অনেক টাকা ব্যয় হয়েছে। তিনি বলেন, কৃষকের মতামত নিয়েই প্রতি বিঘায় সেচ চার্জ ৩ হাজার ২০০ টাকা করা হয়েছে।
এবিষয়ে বিএমডিএ তানোর জোনের সহকারী প্রকৌশলী মাহাফুজুর রহমান বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে কৃষকের মতামতের ভিত্তিতে নতুন অপারেটর নিয়োগ  ও সমিতি গঠনের ব্যবস্থা করা হবে।#
তানোর প্রতিনিধি
মো ০১৭১১-৪১৭৪৬৬

তানোরে চেয়ারম্যান মতিন কান্ডে বিব্রত দলীয় নেতাকর্মীরা।
আলিফ হোসেন,তানোরঃ
রাজশাহী তানোরের পাঁচন্দর ইউনিয়ন (ইউপি) আওয়ামী লীগ সভাপতি ও চেয়ারম্যান আব্দুল মতিনের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। এদিকে মতিন কান্ডে পুরো ইউপির মানুষের মাঝে অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে, বইছে সমালোচনার ঝড়। নিজ দলের নেতাকর্মীরাও চরম বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়েছে। এদিন (ভিডাব্লিউবি) দুঃস্থমাতা কর্মসূচির পুরাতন উপকারভোগীদের সঞ্চয়ের টাকা ফেরত দেবার প্রলোভন দেখিয়ে ইউপি ভবনে আসতে বলেন। কিন্ত্ত ইউপির ৪৭১ পুরাতন উপকারভোগীদের সকাল নয়টা থেকে দুপুর তিনটা পর্যন্ত বসিয়ে রেখে সঞ্চয়ের টাকা না দিয়ে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এখবর ছড়িয়ে পড়লে চেয়ারম্যান মতিনকে নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে এসব ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার সুত্রপাত হয়েছে বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে। জানা গেছে, ২ মার্চ বৃহস্প্রতিবার পাঁচন্দর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চত্বরে (ভিডাব্লিউবি) দুঃস্থমাতার নতুন উপকারভোগীদের মাঝে কার্ড বিতরণ উপলক্ষে আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাংসদ আলহাজ্ব ওমর ফারুক চৌধুরী। এমপিকে খুশি করার জন্য বেশী লোকসমাগম দেখাতে অতি উৎসাহী হয়ে চেয়ারম্যান মতিন সঞ্চয়ের টাকা ফেরত দেবার প্রলোভন দেখিয়ে পুরাতন উপকার ভোগীদের ইউপি ভবন চত্ত্বরে আসতে বলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এদিন এমপি বক্তব্য শেষ করে নতুন উপকারভোগীদের মাঝে কার্ড বিতরণ উদ্বোধন করে মঞ্চ ত্যাগ করেন। এর কিছুক্ষণ পর  চেয়ারম্যান মতিন এসে মাইকে ঘোষণা দেন সঞ্চয়ের টাকা আজ দেওয়া হবে না। পরবর্তীতে সময়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফিঙ্গার প্রিন্ট নিয়ে টাকা দেওয়া হবে।  এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে  বয়োজ্যেষ্ঠ নারীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। অনেকে আবার অপ্রকাশযোগ্য ভাষায় গালাগালি করতে করতে বাড়ির পথে রওয়ানা দেয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক
বয়োজ্যেষ্ঠ নারী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, চেয়ারম্যান মতিন আমাদের বলেছে সঞ্চয়ের টাকা এমপি বিতরন করবেন, তাই সময় মতো উপস্থিত না হলে কেউ টাকা পাবে না। সবাইকে সকাল ৯ টার মধ্যে ইউপি ভবনে উপস্থিত হতে নির্দেশ দেন। সেই মোতাবেক আমরা প্রায় ৮ কিলোমিটার দুরের মোহাম্মপুর গ্রাম থেকে সকাল ৯টার আগেই এখানে এসেছেন। কিন্ত্ত দুপুর  দু’টার পর চেয়ারম্যান ঘোষণা দেয় টাকা পরে দেওয়া হবে এটা কেমন প্রতারণা।
আমাদের এমনিতেই আসতে বললে আমরা আসতাম। কিন্তু টাকা দেওয়ার কথা বলে এত সময় রোদের মধ্যে বসিয়ে রাখলেন। সকাল থেকে না খেয়ে আছি, আবার না খেয়েই চলে যেতে হচ্ছে। এখন মাঠে মাঠে আলু উঠছে। আলু তোলার কাজ করি প্রতিদিন ৪০০ টাকা করে পায়। রান্না করেও আসিনি। আবার অনেকে ছোট বাচ্চা নিয়ে এসে বিপদে পড়েছেন। বয়োজ্যেষ্ঠ কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ে। চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠ এক ইউপি সদস্য তিনি, সঞ্চয় দেওয়ার কথা বলে লোক ডাকতে চেয়ারম্যানকে নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু এমপিকে বেশি লোক দেখানোর জন্য চেয়ারম্যান এমন জঘন্য কাজ করেছে। এতে ভালো করতে গিয়ে খারাপ হয়ে গেছে। অনেকে গালাগালি করতে করতে খালি হাতে ফেরত গেছে। এটা তাদের কাছে কষ্টের ব্যাপার। কারন প্রায় সবাই বয়োজ্যেষ্ঠ মা বয়সি,এদের সঙ্গে প্রতারনা মানায় না। অনেকে চোখের পানি ফেলতে ফেলতে বাড়িতে গেল। আগামীতে জাতীয় নির্বাচন, এসব মানুষ কি আমাদের পক্ষে থাকবে। এমপি কেউ এ বিষয় গুলো দেখা দরকার বলে জানান এই ইউপি সদস্য।এবিষয়ে জানতে চাইলে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন জানান, সঞ্চয়ের টাকা ফেরত দিতে ডাকা হয়েছিল ফিঙ্গার প্রিন্ট না থাকায় টাকা দেওয়া হয়নি। একটি ওয়ার্ডের কিছু ব্যক্তিকে দিয়ে উদ্বোধন করা হয়েছে। ফিঙ্গার প্রিন্ট নিয়ে দিতে গেলে কয়েকদিন লাগবে। এই জন্য বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে ফিঙ্গার প্রিন্ট নিয়ে টাকা দেওয়া হবে। আপনি কি জানতেন না ফিঙ্গার প্রিন্ট নাই জানতে চাইলে তিনি জানান, তারা সারা বছর সরকারি চাল খেলো কতটুকু উপকৃত হলো এসব জানার জন্য সভায় ডাকা হয়েছিল।এবিষয়ে পাঁচন্দর ইউপি আওয়ামী লীগের সম্পাদক বিজেন কর্মকার বলেন, চেয়ারম্যান সাহেব যেটা করেছে সেটা অমানবিক এবং তারাও বিব্রত।