রংপুরের গংগাচড়ায় ৩০ হাজার টাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।


প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারী ২২, ২০২৩, ৭:২৭ অপরাহ্ন / ৪১২
রংপুরের গংগাচড়ায় ৩০ হাজার টাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।
রংপুরের গংগাচড়ায় ৩০ হাজার টাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।
সানজিম মিয়া – গংগাচড়া, (রংপুর) প্রতিনিধি –
রংপুরের গংগাচড়া উপজেলায় সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।উপজেলার আলমবিদিতর ইউনিয়নের খামার মোহনা গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই আশ্রয়ণ প্রকল্পে একটি ঘরের প্রথম বরাদ্দ পান কুড়ার পাড় গ্রামের আনছার আলী। সম্প্রতি ঘরটি তারা বিক্রি করে দেন। দলীল হস্তান্তরের মাধ্যমে ঘরটি কিনে সেখানে বসবাস করছেন মরিয়ম বেগম।
এ ব্যাপারে মরিয়ম বেগম টাকার বিনিময়ে ঘর কেনার কথা স্বীকার করে বলেন, আগের সুবিধাভোগী আনছার আলীর কাছ থেকে নগদ ৮হাজার টাকা এবং দলীলপত্র হস্তান্তরের সময় পাওনা ২২ হাজার টাকা পরিশোধ করার চুক্তি হয় আর এতে সহায়তা করেন আলমবিদিতর ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ বদিয়ার রহমান। ঘরের দলীলপত্র আমার কাছেই আছে যখন সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করবো তখন স্টাম্পে লিখিত করা হবে।
একই আশ্রয়ণের বাসিন্দা নুরুজ্জামান বলেন, এই আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৩০ নম্বর ঘরটি আনছার আলীর কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকার চুক্তিতে চার মাস আগে কিনে নেয় মরিয়ম বেগম কিন্তু এখনও সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করতে পারে নাই যে কারনে আনছার আলী এপর্যন্ত ৩/৪ বার ঘর ছেড়ে দেয়ার আল্টিমেটাম দিয়ে গেছে।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ঘরের জন্য ২শতক জমি বরাদ্দ ছাড়াও শুধু ঘর নির্মাণে সরকার এক লাখ ৭১ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়।
উপজেলার আলমবিদিতর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোকাররম হোসেন সুজন বলেন, এ বিষয়ে আমাকে কেউ কিছু এখনো জানায়নি। এ সম্পর্কে আমার কিছু জানা নেই। গংগাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদ তামান্না বলেন,এভাবে চুক্তিভিত্তিক আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বিক্রির সুযোগ নেই।তদন্ত করে সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নিব।
উলিপুরে এমপি উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। একে অপরের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি।
উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি –
কুড়িগ্রাম-৩ আসনের এমপির মুক্তিযোদ্ধা গেজেট বাতিল, রাজাকার পরিবারের সদস্য ও সাবেক ছাত্রদল নেতা আখ্যায়িত করে মিথ্যাচারের মাধ্যমে সুনাম ক্ষুন্ন করার প্রতিবাদ ও তা প্রমান করার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন দলীয় উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সংসদ সদস্য। ১৫ দিনের মধ্যে এমপির বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমান দিতে না পারলে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দেন তিনি। সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে উলিপুর বণিক সমিতি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এমন হুশিয়ারীদেন কুড়িগ্রাম-৩ আসনের সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক এমএ মতিন। এদিকে এমপির মুক্তিযোদ্ধা গেজেট বাতিল না হলে পালটা আইনি ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি উপজেলা চেয়ারম্যান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগে এমপি বলেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা গোলাম হোসেন মন্টু সংসদ সদস্য ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত মিথ্যাচার করে আসছেন। তিনি গত শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারী) কুড়িগ্রাম জেলা সদরে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করে এমপির মুক্তিযোদ্ধা গেজেট বাতিল, সাবেক ছাত্রদল নেতা ও তার বড় ভাইকে রাজাকার বলে দাবী করেন। এ ঘটনায় এমপি ও তার পরিবারের সুনাম ক্ষুন্ন করার অভিযোগ তুলে উপজেলা চেয়ারম্যানকে তা প্রমান করার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন তিনি। নইলে মিথ্যাচারের জন্য তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দেন এমপি।
সংবাদ সম্মেলনে বীরমুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক এমএ মতিন বলেন, ১৯৭১ সালে আমি এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলাম। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষনে উদ্বুদ্ধ হয়ে তরুন যুবকেরা দেশ স্বাধীন করার জন্য যখন তৈরি হচ্ছিল আমি তাদের সাথে যোগ দেই। তৎকালীন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাব ভাই, পেয়ারা ভাই, রংপুর কারমাইকেল কলেজের ছাত্রনেতা সরকার ইছাহাকসহ আমরা ৪০-৫০ জন উলিপুর শহীদ মিনারে সমাবেশ করে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহনে চুড়ান্ত প্রস্তুতি গ্রহন করি। পরবর্তীতে প্রখ্যাত মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধকালীন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সরকার ইছাহাকসহ আমরা অনেকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করি। এমপি ১১ নং সেক্টরের অধিনে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন বলে জানান।
তিনি সম্মেলনে আরোও বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান আমাকে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বলে দাবী করেছেন। যা মিথ্যা ও কল্পনা প্রসূত। এমপি জোর দিয়ে বলেন, গোলাম হোসেন মন্টু ১৫ দিনের মধ্যে তার বক্তব্যের স্বপক্ষে প্রমান উপস্থাপন করতে না পারলে মিথ্যাচার প্রতারনা মূলক প্রচারের জন্য তার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এমপি দাবী করেন, তিনি রংপুর কারমাইকেল কলেজ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন।
তিনি আরোও বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান সংবাদ সম্মেলন করে আমার প্রতিষ্ঠিত এমএ মতিন কারীগরি কলেজ সম্পর্কে মিথ্যাচার করেছেন তিনি বলেছেন, ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর এই কলেজের এমপিও ভূক্তি হয় এবং তৎকালীন বিএনপির মহাসচিব মান্নান ভূইয়ার ডিও লেটার ব্যবহার করা হয়। প্রকৃত সত্য ঘটনা হলো যে, ১৯৯৮ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিদের্শে তার তৎকালীন পিএস বর্তমান সংসদ সদস্য র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর ডিও লেটারে ২০০০ সালের এপ্রিল মাসে কলেজটি এমপিও ভূক্ত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি  অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক গোলাম হোসেন মন্টু ও তার সমর্থকরা বিএনপির এজেন্ডা বাস্তবায়ন এবং সাবেক এমপি আক্কাস ডাক্তারের মিশন সফল করার জন্য দলের ভিতরে থেকে সুকৌশলে কাজ করে যাচ্ছেন। এরই ফলশ্রুতিতে দলীয় এমপির সুনাম নষ্ট এবং জনসমুক্ষে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, বীরমুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক এমএ মতিন এমপি, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এমডি ফয়জার রহমান, সাবেক ডেপুটি কমান্ডার রবিউস সামাদ, পৌর মেয়র মামুন সরকার মিঠু, আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল মজিদ হাড়ি প্রমুখ। এসময় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের সাবেক ইউনিয়ন কমান্ডারসহ প্রায় দুই শতাধিক বীরমুক্তিযোদ্ধা, আওয়ামীলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীসহ ধামশ্রেনী ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, দূর্গাপুর ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম সাঈদ, ধরনীবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান এরশাদুল হক, তবকপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান, থেতরাই ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা গোলাম হোসেন মন্টু বলেন, এটা তার শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা। উনার কথা সব মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমরা যে অভিযোগ গুলো করেছি তার পক্ষে আমার কাছে প্রমান রয়েছে। এমপির মুক্তিযোদ্ধা গেজেট বাতিল না হলে আমরা সচেতন মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করবো। অন্যদলের এজেন্ডা বাস্তবায়নের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এগুলো মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও কাল্পনিক। আমি তিনট্রাম থেকে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক। আমৃত্যু আওয়ামীলীগের আদর্শ বুকে ধারন করেই থাকবো।