বগুড়ার শেরপুরে গলদা চিংড়ি চাষে সাফল্য, ঝুকছে মৎস্যচাষীরা। 


প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ১২, ২০২২, ৬:২১ অপরাহ্ন / ৫২৬
বগুড়ার শেরপুরে গলদা চিংড়ি চাষে সাফল্য, ঝুকছে মৎস্যচাষীরা। 
বগুড়ার শেরপুরে গলদা চিংড়ি চাষে সাফল্য, ঝুকছে মৎস্যচাষীরা। 
মাসুম বিল্লাহ শেরপুর বগুড়া –
বগুড়ার শেরপুরে মৎস বিভাগের সহযোগিতায় বাণিজ্যিকভাবে গলদা চিংড়ি চাষে সফলতা পেয়েছেন স্থানীয় মৎসজীবীরা। গলাদা-কার্প মিশ্র চাষ করে ৫০ শতাংশ জমি থেকে একজন চাষি ৫ মাসে সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা আয় করছেন। অল্প খরচে অধিক লাভ হওয়ায় শেরপুর উপজেলার গলাদা-কার্প মিশ্র চাষে উৎসাহিত হচ্ছে অনেকে মৎসজীবীরা। এদিকে উৎপাদন বাড়াতে রাজশাহী বিভাগের মৎস্য সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের গলদা চিংড়ি চাষের প্রদর্শনী দিয়েও সহায়তা দিচ্ছেন শেরপুর উপজেলার সিনিয়র মৎস কর্মকর্তা দপ্তর। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষের কারণে আশানুরুপ বড় হয়েছে চিংড়িগুলো। মির্জাপুর ইউনিয়নের উচড়ং গ্রামের মৎসচাষী আব্দুল রাজ্জাক জানান, শেরপুর উপজেলার সিনিয়র মৎস কর্মকর্তা দপ্তরের অনুপ্রেরনায় আমি ৫০ শতাংশ পুকুর গলাদা-কার্প মিশ্র চাষ করেছি এতে খরচ হয়েছে ১ লক্ষ টাকা। এই মাছ বিক্রয়ের উপযুক্ত করতে সাড়ে ৪ থেকে ৫ মাস সময় লাগে। ৫০ শতাংশ পুকুর থেকে ৪ লক্ষ টাকার মাছ বিক্রয় করেছি আরোও দেড় লক্ষ টাকার মাছ বিক্রয় করা যাবে বলে আশা করছেন। অল্প খরচে বেশি লাভ হওয়াতে আমার দেখাদেখি অনেকে এই গলাদা-কার্প মিশ্র চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।
শুভগাছা গ্রামের মৎস চাষি ইনছানুর রহমান জানান, রাজশাহী বিভাগের মৎস্য সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের গলদা চিংড়ি চাষের প্রদর্শনী পেয়েছি। এছড়াও আমি ১ লক্ষ টাকা খরচ করেছি। এই প্রদর্শীতে ৫ মাসে আমার প্রায় ৫ লক্ষ টাকা আয় হবে বলে আশা করছি। তবে গলদা চিংড়ি চাষে রেডিমেট ফিড খাবার দিয়েছি। মৎস্য চাষী সোহেল রানা, রাকিবুল ইসলাম জানান, আমরা বরিশাল ব্যাক হ্যাচারি হতে পোষ্ট লার্ভি এনেছি। উপজেলা মৎস্য বিভাগের সহযোগিতায় ভালো চাষ হয়েছে। ৫ হাজার পোনা ছাড়া হয়েছে এতে প্রায় ২ লক্ষ টাকা খরচ করেছি। তবে সাড়ে  কেজি থেকে ৬শ কেজি চিংড়ি পাওয়া যেতে পারে। প্রতি কেজিতে ৩০টি করে চিংড়ি ধরছে। প্রতি কেজি ১ হাজর থেকে ১১শ টাকায় বিক্রয় হচ্ছে। চিংড়ি চাষে আমাদের গড়ে প্রায় ১ লক্ষ টাকা করে আয় হবে।
চাষীরা আরোও জানান, প্রতিদিন সকাল ১০টা ও সন্ধ্যা ৭টায় চিংড়ির ফিড এচাড়াও বিকাল ৪টার সময় ভাসমান ফিড দিতেন। মাছের ওজন অনুযায়ী খাবার দিতে হয়। প্রতি ১০০ কেজি মাছের ওজনে দিনে ৩-৪ কেজি ফিড দিতে হয়। এছাড়া অক্সিজেনের স্বল্পতা দেখা দিলে অ্যারেটর ব্যবহার করে অক্সিজেনের জোগান দিতে হয়। গলদা চিংড়িতে তেমন কোনও রোগবালাই দেখা যায়নি। মাছের বাজারজাতকরণ নিয়ে চাষীরা বলেন, স্থানীয়ভাবে গলদা চিংড়ির বাজার সেভাবে গড়ে ওঠেনি। তাই তাদের উৎপাদিত গলদা চিংড়ি বিক্রির জন্য শেরপুর উপজেলাসহ আশেপাশের উপজেলার আড়ৎগুলোতে বিক্রয় করেন। এবং মাছ ব্যবসায়ীর সঙ্গেও যোগাযোগ হয়েছে। শেরপুর উপজেলা মৎস কর্মকর্তা মাসুদ রানা সরকার জানান, ৫জন চাষী ২৫ হাজার পিএল (পোষ্ট লার্ভি) বরিশাল ব্রাক হ্যাচারি থেকে এনেছে। পানি ও আবহাওয়ায় গলদা চাষের উপযোগী হওয়ায় এই উপজেলায় সাফল্য মিলেছে। সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে প্রশিক্ষণসহ সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হয়েছে। সামনে আরো চাষিকে প্রশিক্ষন দেওয়া হবে। চিংড়ি চাষে যদিও কিছু চ্যালেঞ্জ আছে। তারপর সাবধান হয় তাহলে ভালো কিছু আশা করা যায়। সব মিলিয়ে গলাদা-কার্প মিশ্র চাষে সাফল্য পেয়েছে মৎস্যচাষিরা।