মোঃ শামীম হোসেন – খুলনা প্রতিনিধিঃ-
দীর্ঘ তিন মাস বন্ধ থাকার পর খুলে দেওয়া হয়েছে সুন্দরবন। চলতি বছরের ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তিন মাস সুন্দরবনের নদ-নদী ও খালে মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে বন বিভাগ। এই তিন মাস প্রজনন মৌসুম হওয়ায় সব ধরনের মাছ আহরণ বন্ধের পাশাপাশি সুন্দরবনে পর্যটকদের প্রবেশও নিষিদ্ধ করা হয়। শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে পর্যটক নিয়ে চারটি লঞ্চ সুন্দরবনে প্রবেশ করেছে। আর ট্রলার ও জালিবোটেও পর্যটকেরা যাচ্ছেন করমজলে। এর আগে, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে সুন্দরবনে প্রবেশ সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, প্রজনন মৌসুমে দুই লাখ ৪৩ হাজার হেক্টর আয়তনের বনটির ৪২০টি নদী-খালে মাছ ধরা বন্ধ থাকে। এতে ইলিশসহ ৪৭৫ প্রজাতির মাছের প্রজনন নির্বিঘ্ন হয়। তবে, এ সময়ে কর্মহীন হয়ে পড়ে মোংলার বঙ্গোপসাগর ও সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল প্রায় ১০ হাজার জেলে পরিবার। পাশাপাশি অলস সময় কাটার ট্যুর অপারেটররাও।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, তিন মাসের নিষেধাজ্ঞায় বনের নদী-খালে মাছ ও বন্যপ্রাণীর প্রজনন বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ হয়েছে। প্রসঙ্গত, জীববেচিত্র্যে ভরপুর সুন্দরবনে বর্তমানে ১১৪টি রয়েল বেঙ্গল টাইগার, দুই লাখ হরিণসহ ৩৭৫ প্রজাতির বন্যপ্রাণী, সুন্দরীসহ ৩৩৪ প্রজাতির গাছপালা, ১৬৫ প্রজাতির শৈবাল, ১৩ প্রজাতির অর্কিড ও ৩০০ প্রজাতির পাখি রয়েছে। এই ম্যানগ্রোভ সুন্দনবনের তিনটি এলাকা ১৯৯৭ সালের ৬ ডিসেম্বর ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইড ঘোষণা করে। সুন্দরবনের মধ্যে ১৮৭৪ বর্গ কিলোমিটার জলভাগে কুমির, ৬ প্রজাতির ডলফিনসহ রয়েছে ২৯১ প্রজাতির মাছ। এই বনে বাংলাদেশ অংশে অক্সিজেনের অফুরন্ত ভাণ্ডার সুন্দনবনের আয়তন প্রায় ৭ হাজার বর্গ কিলোমিটর। এই বিশাল অংশ বিশ্বের বৃহৎ জলাভূমি রামসার এলাকা হিসেবে স্বীকৃত।