Dhaka ০৬:৩৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

“ঠাকুরগাঁওয়ে আমন ধানে স্বপ্ন বুনছেন কৃষকেরা” 

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৬:১৯:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ অক্টোবর ২০২২
  • ৩২৯ Time View
“ঠাকুরগাঁওয়ে আমন ধানে স্বপ্ন বুনছেন কৃষকেরা”
মোহাম্মদ মিলন আকতার, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি
ঠাকুরগাঁও জেলা দেশের উত্তরের কৃষি নির্ভর একটি জেলা। আমন নিয়ে বর্তমানে ব্যস্ত সময় পার করছেন ঠাকুরগাঁও জেলার কৃষকেরা। চারিদিকে সবজু-সোনালী ফসলের মাঠ। আর কিছুদিনের মধ্যেই আমন ঘরে উঠবে কৃষকের। অনেক স্থানে আগাম জাতের ধান কেটে ফেলেছেন কৃষক। অনুকুল আবহাওয়া, সময় উপযোগি বৃষ্টি, জলাবদ্ধতার অবসান এবং কৃষি অফিসের নিয়মিত পরামর্শ, তদারকির কারনে ঠাকুরগাঁও জেলার কৃষকেরা আমনে খুব ভাল একটা অবস্থায় রয়েছেন। সব কিছু ঠিক থাকলে এবছর আমনের বাম্পার ফলন হবে বলে ধারানা করছে কৃষি বিভাগ। তাই জেলার কৃষকেরা আমনে স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছেন। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা ও জেলার বিভিন্ন স্থানে গিয়ে দেখা যায় কিছু স্থানে আগাম জাতের ধান কেটে ঘরে তুলেছেন কৃষকেরা। আবার কিছু কিছু জায়গায় ধান গাছ সোনারী আকার ধারণ করেছে, আর কয়েকদিনের মধ্যেই ধান কেটে ঘরে তুলতে পারবেন। চারা রোপনের পর পর বৃষ্টির পানির অভাবে কৃষকেরা চারা রোপন করতে পারছিলেন না। ফলে বেশ কিছু কৃষককে শ্যালোমেশিন, বরেন্দ্র গভীর নলকূপের সাহায্যে পানি দিতে দেখা যায়। কিছু এলাকায় বৃষ্টির জন্য দোয়া, ব্যাঙের বিয়ে সহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করতেও দেখা যায়। পরবর্তিতে বৃষ্টির পর্যাপ্ত পানি হওয়ায় কৃষকেরা স্বস্তির ঢেকুর ফেলেন। তাই নতুন ধান ঘরে তোলার মাধ্যমে নবান্ন উৎসবের প্রস্তুতি গ্রহন করছেন জেলার কৃষকেরা।
 ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার দানারহাট, বরুনাগাঁও, শীবগঞ্জ, নারগুন, বেগুনবাড়ি, খোঁচাবাড়ি ও জেলার পীরগঞ্জ, হরিপুর, রানীশংকৈল উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, আমনের ধান কাটার দৃশ্য। দল বেঁধে শ্রমিকেরা আমন ধান কাটছেন। এদের মধ্যে নারী শ্রমিকদের আমনের ক্ষেতে কাজ করার দৃশ্য চোখে পড়ে বেশ কয়েক জায়গায়। জনপ্রিয় বেশ কয়েকটি জাতের ধান আবাদ করা হয়েছে ঠাকুরগাঁও জেলায়। তবে আমনে ডিজেলসহ জ্বালানী তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে কৃষকেরা নতুন সমস্যায় পরেছিলেন।
 কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানা যায়, এ বছর ঠাকুরগাঁও জেলায় আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১ লাখ ৩৭ হাজার ৩৫০ হেক্টর। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৪ লাখ ২৯ হাজার ৭১৬ মেট্রিক টন। যা গত বছরে চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৫ হেক্টর। এর মধ্যে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩ লাখ ৯৭ হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ –পরিচালক কৃষিবিদ আবু হোসেন জানান, অন্যান্য ফসলের ন্যয় ধানের জন্যও বিখ্যাত এ জেলা। প্রচুর পরিমানে ধান এ জেলায় উৎপাদন হয়। প্রত্যেক বছরের ন্যয় এ বছরও কৃষকদের যাবতীয় কৃষি সেবা প্রদান করা হয়। বৃষ্টি, সম্পুরক সেচ ব্যবস্থা চালু ও সেচ পাম্পগুলিও সচলের মাধ্যমে পানির চাহিদা পূরণ হয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু স্থানে ধান কেটে ঘরে তুলেছেন কৃষকেরা। বাকীগুলোও অল্প কিছুদিনের মধ্যেই কাটা-মাড়াইয়ের কাজ শুরু হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে লক্ষ্যমাত্রার অতিরিক্ত ধান উৎপাদন হবে এবং কৃষকেরা এ বছরও ধানের ন্যর্য্য মুল্য পাবেন বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

শেরপুর হাইও‌য়ে পু‌লিশ ক‌্যাম্প প‌রিদর্শন কর‌লেন পু‌লিশ সুপার!

“ঠাকুরগাঁওয়ে আমন ধানে স্বপ্ন বুনছেন কৃষকেরা” 

Update Time : ০৬:১৯:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ অক্টোবর ২০২২
“ঠাকুরগাঁওয়ে আমন ধানে স্বপ্ন বুনছেন কৃষকেরা”
মোহাম্মদ মিলন আকতার, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি
ঠাকুরগাঁও জেলা দেশের উত্তরের কৃষি নির্ভর একটি জেলা। আমন নিয়ে বর্তমানে ব্যস্ত সময় পার করছেন ঠাকুরগাঁও জেলার কৃষকেরা। চারিদিকে সবজু-সোনালী ফসলের মাঠ। আর কিছুদিনের মধ্যেই আমন ঘরে উঠবে কৃষকের। অনেক স্থানে আগাম জাতের ধান কেটে ফেলেছেন কৃষক। অনুকুল আবহাওয়া, সময় উপযোগি বৃষ্টি, জলাবদ্ধতার অবসান এবং কৃষি অফিসের নিয়মিত পরামর্শ, তদারকির কারনে ঠাকুরগাঁও জেলার কৃষকেরা আমনে খুব ভাল একটা অবস্থায় রয়েছেন। সব কিছু ঠিক থাকলে এবছর আমনের বাম্পার ফলন হবে বলে ধারানা করছে কৃষি বিভাগ। তাই জেলার কৃষকেরা আমনে স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছেন। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা ও জেলার বিভিন্ন স্থানে গিয়ে দেখা যায় কিছু স্থানে আগাম জাতের ধান কেটে ঘরে তুলেছেন কৃষকেরা। আবার কিছু কিছু জায়গায় ধান গাছ সোনারী আকার ধারণ করেছে, আর কয়েকদিনের মধ্যেই ধান কেটে ঘরে তুলতে পারবেন। চারা রোপনের পর পর বৃষ্টির পানির অভাবে কৃষকেরা চারা রোপন করতে পারছিলেন না। ফলে বেশ কিছু কৃষককে শ্যালোমেশিন, বরেন্দ্র গভীর নলকূপের সাহায্যে পানি দিতে দেখা যায়। কিছু এলাকায় বৃষ্টির জন্য দোয়া, ব্যাঙের বিয়ে সহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করতেও দেখা যায়। পরবর্তিতে বৃষ্টির পর্যাপ্ত পানি হওয়ায় কৃষকেরা স্বস্তির ঢেকুর ফেলেন। তাই নতুন ধান ঘরে তোলার মাধ্যমে নবান্ন উৎসবের প্রস্তুতি গ্রহন করছেন জেলার কৃষকেরা।
 ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার দানারহাট, বরুনাগাঁও, শীবগঞ্জ, নারগুন, বেগুনবাড়ি, খোঁচাবাড়ি ও জেলার পীরগঞ্জ, হরিপুর, রানীশংকৈল উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, আমনের ধান কাটার দৃশ্য। দল বেঁধে শ্রমিকেরা আমন ধান কাটছেন। এদের মধ্যে নারী শ্রমিকদের আমনের ক্ষেতে কাজ করার দৃশ্য চোখে পড়ে বেশ কয়েক জায়গায়। জনপ্রিয় বেশ কয়েকটি জাতের ধান আবাদ করা হয়েছে ঠাকুরগাঁও জেলায়। তবে আমনে ডিজেলসহ জ্বালানী তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে কৃষকেরা নতুন সমস্যায় পরেছিলেন।
 কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানা যায়, এ বছর ঠাকুরগাঁও জেলায় আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১ লাখ ৩৭ হাজার ৩৫০ হেক্টর। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৪ লাখ ২৯ হাজার ৭১৬ মেট্রিক টন। যা গত বছরে চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৫ হেক্টর। এর মধ্যে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩ লাখ ৯৭ হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ –পরিচালক কৃষিবিদ আবু হোসেন জানান, অন্যান্য ফসলের ন্যয় ধানের জন্যও বিখ্যাত এ জেলা। প্রচুর পরিমানে ধান এ জেলায় উৎপাদন হয়। প্রত্যেক বছরের ন্যয় এ বছরও কৃষকদের যাবতীয় কৃষি সেবা প্রদান করা হয়। বৃষ্টি, সম্পুরক সেচ ব্যবস্থা চালু ও সেচ পাম্পগুলিও সচলের মাধ্যমে পানির চাহিদা পূরণ হয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু স্থানে ধান কেটে ঘরে তুলেছেন কৃষকেরা। বাকীগুলোও অল্প কিছুদিনের মধ্যেই কাটা-মাড়াইয়ের কাজ শুরু হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে লক্ষ্যমাত্রার অতিরিক্ত ধান উৎপাদন হবে এবং কৃষকেরা এ বছরও ধানের ন্যর্য্য মুল্য পাবেন বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।