চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে-সড়কে ব্যয় বাড়লো। 


প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ১৫, ২০২২, ৬:০২ অপরাহ্ন / ৫৪৩
চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে-সড়কে ব্যয় বাড়লো। 

চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে-সড়কে ব্যয় বাড়লো। 
মোঃ ইব্রাহিম শেখ চট্টগ্রাম ব্যুরোঃ

দ্বিতীয় দফায় বাড়লো চট্টগ্রাম শহরের লালখান বাজার থেকে শাহ্-আমানত
বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ব্যয়। সেইসঙ্গে বেড়েছে কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুরঘাট
সেতু থেকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ কাজের ব্যয়ও। এ দুই প্রকল্পের মোট ব্যয় বাড়ানো হয়েছে ৮৭৯ কোটি ৭ লাখ ৪৪ হাজার ১০৭ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকার। যার মধ্যে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ ব্যয় বাড়ানো হয়েছে ৬৪৯ কোটি ২ লাখ ৪৩ হাজার ৯১ টাকা। আর কালুরঘাট সেতু থেকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ ব্যয় বাড়ানো হয়েছে ২৩০ কোটি ৫ লাখ ১ হাজার ১১৬ টাকা। বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে ভার্চ্যুয়ালি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় এ সংক্রান্ত দুইটি পৃথক প্রস্তাবে এ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।সভা শেষে এ সিদ্ধান্ত জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান।
তিনি জানান, আজ সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ৩৭তম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় গৃহায়ন ও
গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীন গণপূর্ত অধিদপ্তর কর্তৃক ‘চট্টগ্রাম শহরের লালখান বাজার থেকে শাহ্-আমানত
বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ’ প্রকল্পের ডাব্লউডি-ওয়ান প্যাকেজের পূর্ত কাজের ভেরিয়েশন
বাবদ অতিরিক্ত ৬৪৯ কোটি ২ লাখ ৪৩ হাজার ৯১ টাকা ব্যয় বাড়ানোর ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।
চুক্তির মূল্য ছিল ৩ হাজার ৭২০ কোটি ৪ লাখ ৬৭ হাজার ৭২৮ টাকা। ব্যয় বেড়ে মোট টাকার পরিমাণ
দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৩শ ৬৯ কোটি ৭ লাখ ১০ হাজার ৮শ ১৯ টাকা।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীন গণপূর্ত অধিদপ্তর কর্তৃক ‘কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুরঘাট সেতু
থেকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ’ প্রকল্পের ডাব্লউডি-ওয়ান প্যাকেজের পূর্ত কাজের ভেরিয়েশন বাবদ
অতিরিক্ত ২৩০ কোটি ৫ লাখ ১ হাজার ১১৬ টাকা ব্যয় বাড়ানোর ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। মূল চুক্তির
মূল্য ছিল ৭৮৯ কোটি ২৪ লাখ ৩৯ হাজার ৭৭৮ টাকা। ব্যয় বেড়ে মোট টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক হাজার
১৯ কোটি ২৯ লাখ ৪০ হাজার ৮৯৪ টাকা।
অতিরিক্ত সচিব জানান, সভায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ‘চট্টগ্রাম বন্দরের
বিভিন্ন ইয়ার্ড এবং টার্মিনালের জন্য প্রয়োজনীয় ইক্যুইপমেন্ট  সংগ্রহ’ প্রকল্পের প্যাকেজ জি-৫ লট-১ এর আওতায়
৬টি ০৪ হাই স্ট্যাডেল ক্যারিয়ার চীনের সাংহাই জেনহুয়া হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ কোম্পানি লিমিটেডের কাছ থেকে ৪৯
কোটি ৮৬ লাখ ১৩ হাজার ২৩ টাকায় ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নকশা ‘সংশোধন’ করে আরও ১০৪৮ কোটি টাকা (আগের ব্যয়ের চেয়ে
৩২ শতাংশ) ব্যয় ও দুই বছর মেয়াদ বাড়িয়ে প্রকল্পটি সংশোধন করতে পরিকল্পনা কমিশনের প্রস্তাব পাঠিয়েছিল
সিডিএ। চলতি বছরের ১৩ সেপ্টেম্বরে সংস্থাটির সেই প্রস্তাব মেনেই প্রধানমন্ত্রী এবং একনেক চেয়ারপার্সন শেখ
হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় তা অনুমোদন দেওয়া হয়। চট্টগ্রাম মহানগরের আলোচিত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ পাঁচ বছর শেষে এবার নকশা পাল্টিয়েছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। ফলে এই প্রকল্পটির
শেষ করতে বাড়াতে হয়েছে বড় অঙ্কের অর্থ ও সময়। ২০১৭ সালে একনেকে অনুমোদন হওয়া ৩ হাজার ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ের তিন বছরের প্রকল্পটি মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৪ সালের জুনে শেষ করার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে একনেক। এর আগে ব্যয় না বাড়িয়ে প্রকল্পটির মেয়াদ দুই বছর বাড়িয়ে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছিল। এ দফায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পটির ব্যয় বেড়ে হল ৪ হাজার ৩শ ৬৯ কোটি ৭ লাখ ১০ হাজার ৮শ ১৯ টাকা। আর কালুরঘাট সেতু থেকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত
সড়ক নির্মাণ ব্যয় বেড়ে মোট টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক হাজার ১৯ কোটি ২৯ লাখ ৪০ হাজার ৮৯৪ টাকা।

চট্রগ্রামে জমে উঠেছে শীতের পোশাকের বেচাকেনা। 
মোঃ ইব্রাহিম শেখ চট্টগ্রাম ব্যুরোঃ

শীত পুরোপুরি জেঁকে বসেনি।  তবে বন্দরনগরীর জনাকীর্ণ ফুটপাতগুলোতে জমে
উঠেছে শীতের পোশাকের বেচাকেনা।বিক্রেতাদের কেউ রাস্তায় পলিথিন বিছিয়ে স্তূপ করে আবার কেউ কেউ ভ্যানগাড়িতে,
ভাসমান দোকানে শীত বস্ত্রের পসরা সাজিয়ে বসেছেন।তাদের ‘চাই ল-অ, বাছি ল-অ, একদাম-একরেট’হাঁকডাক আর
ক্রেতাদের ভিড়ে মার্কেট সরগরম থাকছে বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত। বাহারি নকশার বিভিন্ন মানের কোট, ব্লেজার, জ্যাকেট, সোয়েটার, কানটুপি, মাফলার, কার্ডিগান, শাল, ভারী ওড়না, জিনসের জ্যাকেট, হাতমোজা, পায়ের মোজা, গলাবন্ধনী, কানবন্ধনীর স্তূপ থেকে পছন্দের জিনিসটি বেছে নিতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে মানুষ। একই সঙ্গে পুরোনো লেপ-তোশক, কম্বলেরও দারুণ চাহিদা দেখা গেছে। নগরীর নিউমার্কেটের সামনে, জুবিলি রোড, স্টেশন রোড, কেসি দে সড়ক, লালদীঘির পাড়, লয়েল রোড, বকশির হাট, আন্দরকিল্লা, আগ্রাবাদ, বন্দরটিলা, দুই নম্বর গেট, কাজীর দেউড়ি, অক্সিজেন, বহদ্দারহাট, নতুন ব্রিজসহ অলিগলিতে হাত বাড়ালেই এখন পাওয়া যাচ্ছে শীতের পোশাক।
আমদানি করা পুরোনো কাপড়ের গাইট থেকে কয়েক হাত বদল করে ফুটপাত পর্যন্ত আসছে এসব পণ্য। দামও
তুলনামূলকভাবে কম। এ ছাড়া আছে স্থানীয়ভাবে তৈরি নতুন শীতের পোশাকও। বিশেষ করে বাচ্চাদের সোয়েটার,
জ্যাকেট, ছেলেদের ফুলহাতা গেঞ্জি, টি-শার্ট আর মেয়েদের কার্ডিগান। নতুন হোক আর পুরোনোই হোক দর কষাকষি করেই
দফারফা করছেন বেশিরভাগ ক্রেতা।
নগরী ছাড়াও শহরতলী, বিভিন্ন উপজেলা ও প্রত্যন্ত জেলার নিম্নবিত্ত এমনকি মধ্যবিত্ত শ্রেণির লোকজনও শীতের পোশাক
কেনার জন্য ভিড় করছেন ফুটপাতের এসব ভাসমান দোকানে।বেচাকেনার পাশাপাশি সমিতি, লাইটভাড়া, জায়গা ভাড়া,
পাহারাদার, বড় ভাইসহ অদৃশ্য খাতে নানা অজুহাতে দফায় দফায় চাঁদাও দিতে হচ্ছে ভাসমান দোকানিদের।
বর্ষপঞ্জিতে এখনও অগ্রহায়ণ মাস। প্রকৃতিতে হিম বাতাস বইতে শুরু করেছে কয়েকদিন থেকে। সামনে শীতের মাত্রা
বাড়বে। তাই সাধ্যের মধ্যে পছন্দের শীত বস্ত্রটি কিনে নিতে চট্টগ্রামের ফুটপাতজুড়ে কেনাকাটা চলছে শীতের
পোশাকের।সামর্থ্যবান পুরুষ, নারী ও তরুণীদের কাছে এখনো কাশ্মিরী আলোয়ান-শালের কদর কিন্তু রয়ে গেছে আগের
মতোই। নতুন-পুরোনো শীতের পোশাকের জন্য উচ্চমধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে সব শ্রেণির ক্রেতার পছন্দের শীর্ষে জহুর-
হকার্স মার্কেট।
বরাবরের মতো এ বছরও আমদানি করা পুরানো শীতের পোশাকের পাশাপাশি নতুন ডিজাইনের পরিধেয় সামগ্রী মজুদ
করেছেন দোকানিরা। তরুণ-তরুণী আর শিশু-কিশোরদের পোশাকই বেশি বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন
দোকানিরা।নগরীর জহুর হকার্স থেকে শুরু করে নিউমার্কেট এলাকার ফুটপাতজুড়ে বিক্রি হওয়া শীত কাপড় ৫০ থেকে
৫০০ টাকায় এবং ছেলেদের চায়না-কোরিয়ান লেদারের জ্যাকেট, জিন্স ও মোটা কাপড়ের জ্যাকেটও মিলছে এখানে।
বিপণীকেন্দ্রের সামনে বসা নতুন পুরনো কাপড় স্তূপ করে বিক্রির রেওয়াজ রয়েছে। ‘এক দাম ৩০ টাকা’, ‘১ পিস ৪০
টাকা’এ রকম কাগজ সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে অনেক দোকানে। এখানে হাতমোজা, গ্লাভস, কানটুপি, গলাবন্ধনী, মাফলার
ইত্যাদি পাওয়া যাচ্ছে সুলভ মূল্যে।