খুলনা ৪ আসনে তৃণমূলের আস্থায় নগর যুবলীগ সভাপতি পলাশ


প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৩, ৫:৪০ অপরাহ্ন / ৩২৪
খুলনা ৪ আসনে তৃণমূলের আস্থায় নগর যুবলীগ সভাপতি পলাশ
আজিজুল ইসলাম।
খুলনা জেলার ভৈরব ও আঠারো বেকী নদীর নোনা জলের আবহাওয়ায় বেড়ে ওঠা খুলনা শহরের পার্শ্ববর্তী রূপসা উপজেলার আইচগাতী ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা
আলহাজ্ব মোঃ মুশফিকুর রহমানের জ্যৈষ্ঠ পুত্র জাতীয় পর্যায়ে স্বর্ণপদক প্রাপ্ত সফল উদ্যোক্তা খুলনার তরুন সমাজের অনুপ্রেরণা খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বর্তমান মহানগর যুবলীগের সভাপতি সফিকুর রহমান পলাশ আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা—৪ আসনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে তিনটি উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের হাট—বাজার পাড়া মহল্লায় সাধারণ মানুষের মাঝে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র সরকারের উন্নয়ন কর্মযজ্ঞের চিত্র সম্বলিত লিফলেট বিতরণ পথসভা ও মতবিনিময় করছেন। তিনি স্কুল জীবন থেকে ছাত্রলীগের দায়িত্বশীল অবস্থান থেকে ছাত্র রাজনীতি শুরু করেন। পলাশ ১৯৮৬ সালে বেলফুলিয়া স্কুল কমিটির ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পরবর্তীতে আইচগাতী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি, রূপসা উপজেলা ছাত্রলীগের সহ—সভাপতি, খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ২০০৩ সালে তৎকালীন বিএনপি জামায়াত ৪—দলীয় জোট সরকারের আমলে খুলনা মহানগর ছাত্রলীগকে সুসংগঠিত করবার লক্ষ্যে এবং শিক্ষাঙ্গনে সাধারণ ছাত্র—ছাত্রীদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করে সরকার পতনের আন্দোলন সংগ্রাম জোরদার করতে পলাশকে মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। রাজপথে থেকেই পলাশ সিনিয়র নেতৃবৃন্দের আস্থা বিশ্বাসের মর্যাদা রাখতে তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে। তিনি ২০০৯ সাল পর্যন্ত নগর ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। দীর্ঘ এক দশক দলের কোন গুরুত্বপূর্ণ পদে না থেকেও তৃণমূল নেতাকর্মীদের সকল বিপদে পাশে থেকেছেন। তারই ফলশ্রম্নতিতে ঊর্দ্ধতন নেতৃবৃন্দের আস্থা ভালোবাসায় ২০১৯ সালে মহানগর যুবলীগের আহবায়ক মনোনীত হন। ২০২২ সালে বর্ণাঢ্য সম্মেলনের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় অধিবেশনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পলাশকে মহানগর যুবলীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি কর্মীদের সার্বিক সহযোগিতা করে এসেছেন। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকেই খুলনা—৪ আসনে তার নির্বাচন করার সুদূর প্রসারী চিন্তা থেকেই এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষসহ তৃণমূল নেতাকর্মীদের সকল বিষয়ে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রেখে চলেছেন। ক্ষমতাসীন দলের ক্ষমতাবান ব্যক্তি হয়েও নেই কোন দূর্ণাম।
সাধারণ মানুষ তাকে ন¤্র ভদ্র বিনয়ী একজন রাজনৈতিক নেতা হিসেবে জানেন। কারো সাথে কখনো ক্ষমতার দাম্ভিকতার সহিত কথা বলেন না। বিশেষ করে আইচগাতী ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের কাছে দল মতের ঊর্ধ্বে তিনি আমাদের পলাশ হিসেবে পরিচিত। বর্তমান সরকারের বিগত ১৪ বছরে অসংখ্য নেতাকর্মীকে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসবে ধারাবাহিকভাবে সাধারণ মানুষসহ নেতাকর্মীদের অর্থনৈতিক সুবিধা প্রদান করে চলেছেন।
করোনা কালীন সময়ে গোটা বিশ্ব যখন মানবতার প্রশ্নে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। করোনায় আক্রান্ত পিতার হাত থেকে সন্তান বাঁচার জন্য একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে অমানবিক আচরণে পিতা পুত্রের রক্তের বন্ধন যখন প্রশ্নবিদ্ধ। ঠিক তখনই পরিবার পরিজনকে মহান সৃষ্টিকর্তার রহমতের আশায় রেখে নিজের জীবনের সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে দল—মতের ঊর্দ্ধে উঠে ধর্ম—বর্ণ নির্বিশেষে মহানুভবতার পরিচয় দিয়ে তার মানবিক স্বেচ্ছাসেবীদের সঙ্গে নিয়ে কখনো কবরস্থানে কখনো শ্মশানে কখনো আবার করোনা রোগীর শয্যা পাশে থেকে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিয়েছেন। করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়া হাজার হাজার পরিবারের মাঝে নিজস্ব অর্থায়নে খাদ্য সামগ্রী সহ নগদ অর্থ পৌঁছে দিয়েছেন। আজ যারা আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রকাশ করেছেন করোনাকালীন সময়ে তাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া বিরাজমান। উল্লেখ্য (রূপসা, তেরখাদা, দিঘলিয়া) এই তিনটি উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন নিয়ে খুলনার—৪ আসন। এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৪১২ জন। তৎকালীন খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ—সভাপতি এস এম মোস্তফা রশিদী সুজা ১৯৯১ ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে ১৯৯৬ সালে এ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে বিএনপি’র প্রার্থী এম নুরুল ইসলাম দাদু ভাই নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোল্লা জালাল উদ্দীন নির্বাচিত হন। তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা পূর্ণ নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত পরিসংখ্যান বলছে এই আসনটি আওয়ামী লীগ তাদের দখলে রেখেছে। ২০১৪ সালে তৃতীয়বারের মতো এস এম মোস্তফা রশিদী সুজা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। শারীরিক নানান জটিলতায় সুজা তার পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি। তার পূর্বেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ২০১৮ সালে উপ—নির্বাচন এবং একাদশ নির্বাচনে জাতীয় ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব ব্যবসায়ী নেতা আব্দুস সালাম মূর্শেদী আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে দলীয় নেতাকর্মীদের পাশ কাটিয়ে নিজের বিশ্বস্ত ব্যক্তিদের দিয়ে নিজস্ব বলয় তৈরি করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদে পরিবারের সদস্যদের সভাপতি দায়িত্ব দেওয়া ও দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে সদাচরণ না করা সহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে তার বিরূদ্ধে। সকল অভিযোগকে বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে তিনি নিজ গতিতে কাজ করে চলেছেন। আগামী জাতীয় নির্বাচন সম্পর্কে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের অধিকাংশ নেতাকর্মীরা মনে করেন, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করলে দলের নীতি নির্ধারণী মহল অবশ্যই এলাকায় সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য জনপ্রিয় ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিবেন। এক্ষেত্রে সফিকুর রহমান পলাশ অনেকের থেকে যোজন যোজন এগিয়ে রয়েছে। জাতির সূর্যসন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা খায়ের চৌধুরী বলেন, পলাশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী মুজিব আদর্শের কর্মী স্বাধীনতা বিরোধী কুচক্রের হাত থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করতে এবং তরুণ প্রজন্মকে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে পলাশের মত মেধাবীদের সঠিক মূল্যায়ন করলে দেশ ও জাতীয় উপকৃত হবে। দিঘলিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ—সভাপতি বাবু মিলন কান্তি দে বলেন, পলাশ অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী খাঁটি বাঙ্গালি মুসলমান সে আমাদের সকল ধর্মীয় ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে সার্বিক সহযোগিতা করে থাকেন। তাকে মনোনয়ন দিলে জন—জরিপের সঠিক মূল্যায়ন হবে বলে মনে করি। তেরখাদা উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র সহ—সভাপতি সেলিম শেখ বলেন, এ অঞ্চলের মানুষকে খুলনা শহরে সুচিকিৎসার ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে পলাশ ভাই আমাদের সার্বিক সহযোগিতা করেন। তিনি মনোনয়ন পেলে আমরা উভয় দিক থেকে উপকৃত হব। হাফেজ মাওলানা কামরুজ্জামান বলেন, পলাশ ভাই একজন ধর্মপ্রাণ মানুষ তিনি দুহাত ভরে মসজিদ মাদ্রাসায় দান করেন এবং এতিম শিশুদের খুবই স্নেহ ভালোবাসেন। সফিকুর রহমান পলাশ বলেন, পারিবারিকভাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ হৃদয়ে ধারণ করে স্কুল জীবন থেকে রাজনীতি শুরু করেছি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকেই দুঃসময়ে দূর্দিনে দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের পাশে থাকার শিক্ষা পেয়েছি। আমি মনে করি কর্মীদের আস্থা ও সাধারণ মানুষের বিশ্বাস অর্জন করতে পেরেছি। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে দলের কাছে আমি আমার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে কাজ করে চলেছি। আওয়ামী লীগ সভাপতি রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা যাকেই মনোনয়ন দিবেন নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত করতে রাজপথে থাকবো ইনশাআল্লাহ।
উল্লেখ্য, এ আসনটিতে ক্ষমতাশীল আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে আরো অনেকে কাজ করছেন। তারা হলেন, খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট সুজিত অধিকারী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সরফুদ্দিন বিশ্বাস বাচ্চু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান জামাল, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম খালেদিন রশিদী সুকর্ণ মনোনয়ন প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সকলেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে আশাবাদী।