“কুড়িগ্রামে শীতে কদর বেড়েছে মুখরোচক ভাপা পিঠার”


প্রকাশের সময় : নভেম্বর ২৭, ২০২২, ৮:৪৩ অপরাহ্ন / ৫৯১
“কুড়িগ্রামে শীতে কদর বেড়েছে মুখরোচক ভাপা পিঠার”

“কুড়িগ্রামে শীতে কদর বেড়েছে মুখরোচক ভাপা পিঠার”

এ আর রাকিবুল হাসান, কুড়িগ্রাম –

আবহমান গ্রাম বাংলায় শীতের পিঠা গ্রামীণ ঐতিহ্য। শীত মানেই পিঠা-পুলির ঘ্রাণ। কুয়াশা মোড়ানো শীতের হিমেল হাওয়ায় ধোঁয়া উঠা ভাপা পিঠার স্বাদ না নিলে যেন তৃপ্তি মেটেনা অনেকের। শীত মৌসুমে গ্রামীণ বধূরা রকমারী পিঠা তৈরি করেন। শীতের পিঠার মধ্যে ভাপা পিঠা একটি অন্যতম পিঠা। ভাপা পিঠা আবার হরেক রকম পদ্ধতিতে তৈরি করা হয়। কখনো মিষ্টি ভাপা, কখনো ঝাল ভাপা। শীত এলেই যেন হরেক রকম সুস্বাদু পিঠার বাহারি আয়োজন। শীত এলেই শহর ও গ্রামীণ হাটবাজারে নানা রকম পিঠা বিক্রি করা হয়। বিশেষ করে ভাপা পিঠা, তেলের পিঠা ও চিতই পিঠা। শীত বাড়ার সাথে সাথে শহরের ফুটপাতে শীতের পিঠার ব্যবসা জমে উঠেছে। চুলার অল্প আঁচের ধোঁয়া উড়ছে। গরম গরম ভাপা, চিতই নামছে। ক্রেতারা এসে সারিবদ্ধ হয়ে পিঠা কিনছেন। কুড়িগ্রাম ঘোষপাড়া ও জেলা পরিষদ,বাস টার্মিনাল সহ শহরের বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট পিঠার দোকান সাজিয়ে বসছে নারী-পুরুষ বিক্রেতারা। অনেকেই এই শীতের মৌসুমে পিঠা বিক্রিকে বেছে নিয়েছেন মৌসুমী পেশা হিসেবে। বেচাকেনাও বেশ ভালোই চলছে। চলতি পথে থেমে বা অস্থায়ী দোকানের বেঞ্চে বসেই সন্ধ্যায় হালকা নাশতাটা সেরে নিচ্ছেন গরম গরম ভাপা পিঠা কিংবা চিতই (সাঝের পিঠা) পিঠা দিয়ে। কেউবা চিতই পিঠার সাথে নিচ্ছেন গুড়, কেউবা ঝালযুক্ত সরিষা বাটা। প্রতিটি ভাপা পিঠা বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকা এবং চিতই ৫ টাকায়। সাথে গুড় কিসমিস সরিষা বাটা থাকছে ফ্রি।

বেশির ভাগ বিক্রেতাই ভাপা পিঠা বিক্রি করছেন। তবে চিতইও কম চলছে না। কোথাও কোথাও থাকছে পান পিঠা। অনেক রেস্টুরেন্ট এখন বাহারী পিঠার পসরা সাজিয়ে খদ্দেরকে আকৃষ্ট করছে। রেস্টুরেন্টভেদে মিলছে ভাপা পিঠা, খেজুর রসের পিঠা, শাহি ভাপা পিঠা, খোলা চিতই, দুধ চিতই, রস চিতই বা রসের পিঠা, ডিম চিতই, সিদ্ধ কুলি পিঠা, ভাজা কুলি পিঠা, ঝাল কুলি, তিলের পুলি, ছানার পুলি, দুধপুলি, নারিকেলের তিল পুলি, ক্ষীরে ভরা পাটি সাপটা, চিংড়ি মাছের নোনতা পাটিসাপটা, গাজর কপি পাটিসাপটা, তেলেভাজা পিঠা অথবা পাকান পিঠা, সুন্দরী পাকান পিঠাসহ নানা পিঠা। কুড়িগ্রাম ঘোষপাড়া এলাকার পিঠা বিক্রেতা জানান, শীতের পিঠা অনেক ভালো চলে। ভাপা ১০ টাকা, চিতই ২ পিস ১০ টাকায় বিক্রি করেন তিনি। যুবক-যুবতী-মুরব্বি সব বয়সের লোকই আসেন তার দোকানে পিঠা খেতে। অনেকে বাসায় নিয়ে যান। পিঠা কিনতে আসা খাজা ইউনুস ইসলাম ঈদুল ও মোঃ আউয়াল ইসলাম বলেন আমরা প্রতিদিনই সন্ধ্যার পর এই দোকান থেকে পিঠা খাই। শীত কালের খাবার মধ্যে পিঠা অন্যতম। আগে যদিও বাড়িতে এসব পিঠা বানানোর হিড়িক পড়তো এখন তা আর দেখা যায় না। সারিবদ্ধ বসে পিঠা খাচ্ছেন অনেকেই। তাঁদের মধ্যে এক ব্যক্তি বলেন, আমি আর আমাদের এলাকার কিছু ছোট ভাইদেরকে নিয়ে আজ সন্ধ্যায় পিঠা আড্ডায় মিলেছি। গ্রামের মানুষ নবান্নের আনন্দে যেভাবে শীতকে বরণ করে নিচ্ছে – হোক তা ঘরে কিংবা বাইরে, বাহারি পিঠার স্বাদে শীতকে বরণ করে নিচ্ছে এখন। শীতের মৌসুমি পিঠার স্বাদ এখন চাইলেই পাওয়া যায় জীবনে।