ঐতিহাসিক ষাটগুম্বজ মসজিদ এলাকায় দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়লেও বাড়েনি সুযোগ সুবিধা। দর্শনার্থীদের নানান অভিযোগ রয়েছে।


প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ২৬, ২০২২, ৫:০৬ অপরাহ্ন / ৫৫১
ঐতিহাসিক ষাটগুম্বজ মসজিদ এলাকায় দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়লেও বাড়েনি সুযোগ সুবিধা। দর্শনার্থীদের নানান অভিযোগ রয়েছে।
ঐতিহাসিক ষাটগুম্বজ মসজিদ এলাকায় দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়লেও বাড়েনি সুযোগ সুবিধা। দর্শনার্থীদের নানান অভিযোগ রয়েছে।
মেহেদি হাসান নয়ন, বাগেরহাট –
বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্তর্ভুক্ত ষাটগুম্বজ মসজিদ ও আশে পাশের এলাকায় অবস্থিত তৎকালীন নিদর্শন দেখতে প্রতিদিন দেশ বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসে হাজার হাজার দর্শনার্থীরা। পরিবার পরিজন, বন্ধু বান্ধব ছাড়াও শিক্ষা সফরেও প্রতিনিয়ত আসছে শিক্ষার্থীরা। খানজাহানের হাজার হাজার ভক্তবৃন্দও আসে এই ঐতিহাসিক মসজিদ সংলগ্ন ঘোড়া দীঘিতে গোছল করে নামাজ পড়ার জন্য। অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা দীঘিতে পবিত্র হয়ে মসজিদে অথবা পাথরের কাছে বসে ইট পাথরে চুমু খেয়ে মনোবাসনা পূরণের লক্ষে প্রার্থনা করে। পদ্মা ও বেকুটিয়া ব্রিজের দ্বার উম্মোচনের পর থেকে বহুগুনে বেড়েছে দর্শনার্থী। দেশের যে কোনো জায়গা থেকে স্বল্প সময়ে চলে আসা যাচ্ছে এই খলিফাতাবাদ খানজাহানের পুণ্যভূমির বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন দেখতে। তবে দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়লেও বাড়েনি তাদের জন্য থাকা খাওয়া সহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা। প্রচার প্রচারণার কারণে দর্শনার্থীদের কাছে অদেখা রয়ে যায় সিংগাইর মসজিদ, খান জাহানের সমাধি, বিবি বেগনি মসজিদ, দশগুম্বজ মসজিদ , নয় গুম্বজ মসজিদ, চুনখোলা মসজিদ, সাবেকডাঙ্গা মসজিদ, অযোধ্যা বা কোধলার মঠ, খানজাহানের বসতভিটা সহ অসংখ্য সুলতানি আমলের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন।
বিভিন্ন দর্শনার্থীদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, দর্শনার্থীদের মধ্যে কেউ কেউ জীবনে এই প্রথমবার দেখতে এসেছে এই ষাটগুম্বজ মসজিদ। আবার কেউ কেউ একাধিকবার এসেছে এই প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন দেখতে। তবে তাদের অভিযোগ পর্যাপ্ত বাথরুমের অভাব রয়েছে এই ক্যাম্পাসের মধ্যে। কিডস জোন রয়েছে খুবই স্বল্প জায়গার মধ্যে। দর্শনার্থীরা অসুস্থ হলে চিকিৎসাসেবা পাওয়া দুস্কর বলেও জানিয়েছে তারা। সুস্বাদু কিংবা ভালো মানের খাবারের ব্যবস্থা নেই এই এলাকায়, এমনকি অভাব রয়েছে দূরদূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীদের জন্য আবাসিক ব্যবস্থা। গাড়ি পার্কিংয়ের সমস্যার কোথাও উল্লেখ করেন তারা।
এবিষয়ে জেলার টুরিস্ট পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মোশারফ হোসেন বলেন, ষাটগুম্বজ মসজিদ, খানজাহানের মাজারসহ এই এলাকার অন্যান্য প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানে দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা স্বাভাবিক রয়েছে। এই মসজিদ এলাকায় প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীনে থাকা নিরাপত্তাবাহিনী ও কর্মচারী সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে। পুরো ক্যাম্পাস এলাকা রয়েছে সিসিটিভির অন্তরভুক্ত। তাছাড়া আনসার বাহিনীর একদল সদস্যও সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে। দশনার্থীদের মধ্যে অনেককেই দীর্ঘ ভ্রমণ কিংবা শারীরিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়তে দেখা যায়। আমরা স্থানীয় চিকিৎসকের মাধ্যমে তাদের সেবা দিয়ে থাকি। তবে প্রত্নতত্ব বিভাগের নিজস্ব তত্ত্বাবধায়নে সার্বক্ষণিক একজন চিকিৎসক থাকলে দর্শনার্থীদের সেবাদান দ্রুত সম্ভব হবে।
বাগেরহাট জাদুঘরের কাস্টোডিয়ান মোহাম্মদ যায়েদ দর্শনার্থীদের এসব অভিযোগের বিষয়ে বলেন, পদ্মা ও বেকুটিয়া ব্রিজের দ্বার উম্মোচনের পর থেকে বহুগুনে বেড়েছে দর্শনার্থী। আমরা দর্শনার্থীদের সর্বচ্চো সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। ইতিমধ্যে দিঘির উত্তর পাশে ওয়াক ওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। কেউ অসুস্থ হলে স্থানীয় চিকিৎসক দিয়ে সেবা প্রদান করা হচ্ছে। ষাটগুম্বজ মসজিদ নিয়ে কৌতুহলী দর্শনার্থীদের হাজারো প্রশ্নের জবাবও দিতে হয় আমাদের। মসজিদ ও তার চারপাশে সৌন্দর্য বর্ধন ও আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। তবে এই এলাকার অন্যান্য নিদর্শন সমূহ দর্শনার্থীদের জানানোর জন্য বিভিন্ন উদ্দ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ইতিহাস ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ এই অঞ্চলকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ করা হবে। লিফলেট বিতরণ করা যায় কি না ভেবে দেখা হবে। দর্শনার্থীদের থাকা ও খাবারের ম্যান উন্নয়নের জন্য হোটেল মালিক সহ স্থানীয় সকল ব্যবসায়ীদের বলা হয়েছে।
খুলনায় বেকার তরুণ-তরুণীদের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার ৭ চক্র গ্রেফতার। 
আব্দুল্লাহ আল মামুন বিশেষ প্রতিনিধি:
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভুয়া বিজ্ঞাপন দিয়ে শত শত বেকার তরুণ-তরুণীদের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে আসছিল এক প্রতারক চক্র। খুলনায় অগ্নি নামে একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এই প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। ওই প্রতিষ্ঠানের নারীসহ ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- অগ্নি কোম্পানির মূলহোতা অভয়নগরের সৈয়দ তানভীর আহম্মেদ (৩১), খুলনার দিঘলিয়ার সাহাবুদ্দিন (৪০), ঝালকাঠি রাজাপুরের সোহেল (২৮), মোল্লারহাট হাড়িদাহের রেজাউল করিম (৩০), সাতক্ষীরা শ্যামনগর জাদরপুরের জাহিনুর ইসলাম (২০), নগরীর বয়রার জহিরুল ইসলাম (২০) ও ঝালকাঠির রাজাপুরের এক নারী সদস্য।
আজ রবিবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে র‌্যাব সদর দপ্তরে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন র‌্যাব-৬ খুলনার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মো. সারোয়ার হোসেন। তিনি জানান, গোয়েন্দা তৎপরতা এবং বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে র‌্যাব-৬ জানতে পারে খুলনা মহানগরীতে একটি প্রতারক চক্র ফেসবুকে চাকরির চটকদার বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে বেকার তরুণ-তরুণীকে ফাঁদে ফেলে তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে আসছিল। আভিযানিক দলটি গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে জানতে পারে প্রতারক চক্রটি বেশ কিছু তরুণ-তরুণীকে তাদের অফিসে আটকিয়ে রেখে জোরপূর্বক অর্থ আদায়ের চেষ্টা করছে।
গত শনিবার রাত ৮টায় র‌্যাব-৬ খুলনার একটি আভিযানিক দল খুলনার সোনাডাঙ্গা হাফিজনগর এলাকায় এনএইচ টাওয়ারের ৬ তলায় অবস্থিত অগ্নি কোম্পানি লিমিটেডের অফিসে অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে প্রতারক চক্রের মূলহোতাসহ ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
একই সঙ্গে ভুক্তভোগীদেরও উদ্ধার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্য এবং আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, চক্রটি তরুণ-তরুণীদরে চাকরি দেওয়ার নাম করে তাদেরকে অফিসে ডেকে নানা ফাঁদে ফেলে টাকা আত্মসাৎ করতো এবং তাদেরকে অন্যদের ফাঁদে ফেলানোর কাজে বাধ্য করতো।
গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে ১০টি মোবাইল ফোন, ৪টি ল্যাপটপ, ৪০টি ভর্তি ফরম, ৪৫টি অঙ্গীকার নামা, ১টি সিসি ক্যামেরার ডিভাইস, ৪টি রেজিস্টার, ৫৪ হাজার ২১০ টাকা উদ্ধার ও জব্দ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা প্রতারণার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। জব্দ করা আলামত ও আসামিদেরকে খুলনার সোনাডাঙ্গা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলার কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
দক্ষিণ বেদকাশী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়।
আবুবকর সিদ্দিক, জেলা বিশেষ প্রতিনিধি,খুলনা:-
খুলনার কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পুনর্মিলনীর বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে দিনভর ছিল অগ্রজ-অনুজের মিলনমেলা। প্রতিষ্ঠার ষষ্ঠ দশকে ১ম বারের মতো গতকাল রবিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে জমকালো আয়োজনে উৎসবমুখর পরিবেশে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলন অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘদিন পর প্রিয় ক্যাম্পাসে প্রিয় বন্ধুদের কাছে পেয়ে আনন্দে মেতে ওঠেন সবাই। অনুষ্ঠানের তিনদিন আগেই বিদ্যালয়ের প্রথম পুনর্মিলনীতে পুরো ক্যাম্পাস সেজেছিল বর্ণিল আলোকছটায়। নানান বয়সের প্রাক্তনদের আবেগ যেন একটু বেশিই ছিল। খুনসুটিতেও কেউ কাউকে ছেড়ে দেননি। তাদের আবেগ-স্মৃতিচারণ-আড্ডা ছুঁয়ে যায় বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। আর গানের সেই কলির মতোই ‘প্রাণ জুড়াবে তাই’ এর মতোই দীর্ঘদিনের পুরনো বন্ধু, সতীর্থ, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পেয়ে প্রাণ জুড়িয়েই শেষ হয় পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান।প্রতিষ্ঠার ৬০ বছরে আয়োজিত পুনর্মিলনী মিলনমেলায় প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা যেন হারিয়ে গিয়েছিলেন সেই পুরনো দিনের স্মৃতিতে। খুঁজে ফিরেছেন শিক্ষাজীবনের দিনগুলোর স্মৃতিকথা। উৎসবে শামিল হওয়া প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের অনেকেই এখন দেশ-বিদেশে নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। আর তাঁরাই যেন ফিরে যান সেই উচ্ছল তারুণ্যভরা দিনগুলোতে। পুরনো সব বন্ধু আর সহপাঠীকে পরস্পর জড়িয়ে ধরে হয়েছেন আত্মহারা। হাতে হাত আর বুকে বুক মিলিয়ে করেছেন কুশলবিনিময়। অনেকে আবার প্রিয় সহপাঠীকে পেয়ে সেলফি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। মোবাইল ক্যামেরায় নিজেদের বন্দী করেন নতুন করে।পুনর্মিলন উদযাপন কমিটির আহবায়ক হরষিত কুমার মন্ডলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভাসর্যুয়ালি অংশ নিয়ে বক্তৃতা করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোঃ আক্তারুজ্জামান বাবু। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের সংবর্ধনা পর্বে ক্রেস্ট, উপহার সামগ্রী তুলে দেবার পর অনুভূমি প্রকাশ পর্বে শিক্ষকদের বক্তৃতায় উপস্থিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক অনন্য পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
পুনর্মিলনী উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব আশরাফুল ইসলাম নূরের পরিচালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ,অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক নূর মোহাম্মদ মোড়ল, হরষিত কুমার মন্ডল,আব্দুল মতলেব ,আব্দুল হামিদ,নজরুল ইসলাম,রবীন্দ্রনাথ মন্ডল,মোজাম্মেল হক,নিরাপদ গাইন,আব্দুর রহমান বাচ্চু,ওসমান গণি,আনিছুর রহমান প্রমুখ। বিকেল গড়াতেই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে খুলনার সিলভার এন্টারটেইনমেন্টের পরিবেশনায় সূরের মোহনায় বিমোহিত হন সকলেই। আর সকাল থেকেই ছিল সাংস্কৃতিক মঞ্চে বিনাপানি অগ্রদূত শিল্পগোষ্ঠির মনমুগ্ধকর পরিবেশনা। অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ পথেই প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের হাতে স্মরণিকা, টিশার্ট, সকাল নাস্তা ও দুপুরের খাদ্য কূপনসহ উপহার সামগ্রী তুলে দেয়া হয়। এছাড়া দিনভর অনুষ্ঠানস্থলে ছিল ফ্রি চা-কফির ব্যবস্থাও।
মোঃ আবুবকর সিদ্দিক
জেলা বিশেষ প্রতিনিধি,খুলনা
মোবাইল-০১৭১৯২৬৪৩৯৪