Dhaka ০২:৩২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

“আমনে মাজরা পোকার হানা, বিপাকে কৃষক”

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৪:৫৩:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২২
  • ৩৮৮ Time View
আমনে মাজরা পোকার হানা, বিপাকে কৃষক
মাহাবুবুল আলম সোহাগ, ময়মনসিংহ প্রতিনিধিঃ
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে রোপা আমনে হানা দিয়েছে মাজরা পোকা ও গোড়া পচা রোগ। একদিকে মজুরি খরচসহ সার ও তেলের মূল্য বৃদ্ধি, তার ওপর ধানে পোকা ও গোড়ায় পচন ধরায় কপালে হাত উঠেছে কৃষকদের।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন মাঠের আমনখেত মাজরা পোকা ও গোড়া পচা রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। কৃষকেরা ছিটাচ্ছেন বিভিন্ন কীটনাশক। এ সময় কৃষকেরা জানান, কীটনাশক দেওয়ার পরেও যদি আমনের মাজরা পোকা ও গোড়া পচা রোগ দমন না হয়, তাহলে আমনের ফলন নিয়ে শঙ্কায় পড়তে হবে তাঁদের।
চরপুবাইল গ্রামের আমনচাষি আবুল কালাম বলেন, আমনখেতে মাজরা পোকার আক্রমণ  ও গোড়া পচা রোগ দেখা দিয়েছে। ধানের শিষ না আসতেই ধানের এমন রোগ দেখা দেওয়ায় আমরা হতাশ। কীটনাশক প্রয়োগে পোকার আক্রমণ কিছুটা কমেছে। তবে সম্পূর্ণভাবে মাজরা পোকা মুক্ত হয়নি। আর গোড়া পচা রোগে কোনো ওষুধ কাজ করছে না। যদি এই রোগ দূর না করা যায়, তবে ধানের ফলন নিয়ে হতাশায় পড়তে হবে। নিজসরিষা গ্রামের মতিন মিয়া বলেন, আমনে গোড়া পচা রোগ ও মাজরা পোকার আক্রমণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। বর্তমানে আবাদ করা খুবই কষ্টের।ধান চাষের সব উপাদানের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে। এর মধ্যে আবার গোড়া পচা রোগ ও মাজরা পোকার আক্রমণ। তবে কীটনাশক প্রয়োগ করে কমতে শুরু করেছে রোগ। শেষ পর্যন্ত কী হয়,সেই অপেক্ষায় আছি।
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে রোপা আমন ধান রোপণ করা হয়েছে ১৯ হাজার ২৭৫ হেক্টর জমিতে। আমনে মাজরা পোকা ও গোড়া পচা রোগ দেখা দিয়েছে এমন কোনো তথ্য নেই উপজেলা  কৃষি বিভাগের কাছে। তবে এ ধরনের সমস্যা দেখা দিলে চাষিদের সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হবে উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে।
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নুসরাত জামান জানান, পূর্ণবয়স্ক মাজরা পোকার আক্রমণ যখন বেড়ে যায়, তখন ধানখেত থেকে ২০০ -৩০০ মিটার দূরে আলোক ফাঁদ বসিয়ে পোকা দমন করা যায়। তাছাড়া ধানের জমিতে ১০০ মিটারের মধ্যে  ১০-১৫ টি মরা শিষ অথবা পাঁচটি মরা শিষ পাওয়া গেলে ভিরতাকো-৪০ ডব্লিউজি অথবা ফুরাডান- ৫ জিসহ বিভিন্ন কীটনাশক ব্যবহারে পোকা দমন করা যায়। তবে এসব কীটনাশক সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে। কিছু কীটনাশক পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হয়। তবে দানাদার কীটনাশক প্রয়োগের সময় জমিতে অবশ্যই পানি থাকতে হবে।
কৃষি কর্মকর্তা নুসরাত জামান আরও জানান, আর গোড়া পচা রোগ দমনে টিল্ট ২৫০ ইসি অথবা এমিস্টার টপ নির্ধারিত মাত্রায় ৭ দিন পরপর তিনবার স্প্রে করতে হবে। গোড়া পচা রোগের ক্ষেত্রে জমির পানি বের করে দিতে হবে।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

শেরপুর হাইও‌য়ে পু‌লিশ ক‌্যাম্প প‌রিদর্শন কর‌লেন পু‌লিশ সুপার!

“আমনে মাজরা পোকার হানা, বিপাকে কৃষক”

Update Time : ০৪:৫৩:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২২
আমনে মাজরা পোকার হানা, বিপাকে কৃষক
মাহাবুবুল আলম সোহাগ, ময়মনসিংহ প্রতিনিধিঃ
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে রোপা আমনে হানা দিয়েছে মাজরা পোকা ও গোড়া পচা রোগ। একদিকে মজুরি খরচসহ সার ও তেলের মূল্য বৃদ্ধি, তার ওপর ধানে পোকা ও গোড়ায় পচন ধরায় কপালে হাত উঠেছে কৃষকদের।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন মাঠের আমনখেত মাজরা পোকা ও গোড়া পচা রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। কৃষকেরা ছিটাচ্ছেন বিভিন্ন কীটনাশক। এ সময় কৃষকেরা জানান, কীটনাশক দেওয়ার পরেও যদি আমনের মাজরা পোকা ও গোড়া পচা রোগ দমন না হয়, তাহলে আমনের ফলন নিয়ে শঙ্কায় পড়তে হবে তাঁদের।
চরপুবাইল গ্রামের আমনচাষি আবুল কালাম বলেন, আমনখেতে মাজরা পোকার আক্রমণ  ও গোড়া পচা রোগ দেখা দিয়েছে। ধানের শিষ না আসতেই ধানের এমন রোগ দেখা দেওয়ায় আমরা হতাশ। কীটনাশক প্রয়োগে পোকার আক্রমণ কিছুটা কমেছে। তবে সম্পূর্ণভাবে মাজরা পোকা মুক্ত হয়নি। আর গোড়া পচা রোগে কোনো ওষুধ কাজ করছে না। যদি এই রোগ দূর না করা যায়, তবে ধানের ফলন নিয়ে হতাশায় পড়তে হবে। নিজসরিষা গ্রামের মতিন মিয়া বলেন, আমনে গোড়া পচা রোগ ও মাজরা পোকার আক্রমণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। বর্তমানে আবাদ করা খুবই কষ্টের।ধান চাষের সব উপাদানের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে। এর মধ্যে আবার গোড়া পচা রোগ ও মাজরা পোকার আক্রমণ। তবে কীটনাশক প্রয়োগ করে কমতে শুরু করেছে রোগ। শেষ পর্যন্ত কী হয়,সেই অপেক্ষায় আছি।
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে রোপা আমন ধান রোপণ করা হয়েছে ১৯ হাজার ২৭৫ হেক্টর জমিতে। আমনে মাজরা পোকা ও গোড়া পচা রোগ দেখা দিয়েছে এমন কোনো তথ্য নেই উপজেলা  কৃষি বিভাগের কাছে। তবে এ ধরনের সমস্যা দেখা দিলে চাষিদের সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হবে উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে।
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নুসরাত জামান জানান, পূর্ণবয়স্ক মাজরা পোকার আক্রমণ যখন বেড়ে যায়, তখন ধানখেত থেকে ২০০ -৩০০ মিটার দূরে আলোক ফাঁদ বসিয়ে পোকা দমন করা যায়। তাছাড়া ধানের জমিতে ১০০ মিটারের মধ্যে  ১০-১৫ টি মরা শিষ অথবা পাঁচটি মরা শিষ পাওয়া গেলে ভিরতাকো-৪০ ডব্লিউজি অথবা ফুরাডান- ৫ জিসহ বিভিন্ন কীটনাশক ব্যবহারে পোকা দমন করা যায়। তবে এসব কীটনাশক সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে। কিছু কীটনাশক পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হয়। তবে দানাদার কীটনাশক প্রয়োগের সময় জমিতে অবশ্যই পানি থাকতে হবে।
কৃষি কর্মকর্তা নুসরাত জামান আরও জানান, আর গোড়া পচা রোগ দমনে টিল্ট ২৫০ ইসি অথবা এমিস্টার টপ নির্ধারিত মাত্রায় ৭ দিন পরপর তিনবার স্প্রে করতে হবে। গোড়া পচা রোগের ক্ষেত্রে জমির পানি বের করে দিতে হবে।