অনুমতিপত্র ছাড়াই অবৈধ ভাবে উওোলন হচ্ছে সমুদ্রের বালি।
চট্টগ্রাম (সীতাকুণ্ড)প্রতিনিধি –
অবৈধ ভাবে উওোলন হচ্ছে সমুদ্রের বালি।নেই কোনো অনুমতিপত্র, দেখেও না দেখার মত আচরণ করছে স্থানীয় নৌ পুলিশ কর্মকর্তারা। প্রশাসনের নাকের ডগায় বসে চলছে অবৈধ বালি উত্তোলন।এই কাজের পিছনে রয়েছে শক্তিশালী চক্র।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় সীতাকুন্ড উপজেলার ৬নং বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন ৯নং ওয়ার্ড আকিলপুর এলাকায় সমুদ্র থেকে দীর্ঘ প্রায় ৩০০ মিটার লম্বা পাইপ লাইনের মাধ্যামে শক্তিশালী ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু তুলে পুকুর ভরাট করা হচ্ছে এতে করে যেমন নদী ভাঙ্গন আশঙ্কা ও অপরদিকে পুকুর ভরাট করে পরিবেশের বিনষ্ট ঘটছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ সরকারের শত-কোটি টাকা ব্যায় নির্মিত বেড়িবাঁধ কেটে পাইপ লাইন বসিয়ে রাত-দিন কর্মযজ্ঞ করে বালু উত্তোলন করছে প্রভাবশালী চেয়ারম্যান চক্র,এতে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয়সহ বেরিবাঁধ থেকে যাওয়ার আশঙ্কা করে ক্ষোভ প্রকাশ করছে স্থানীয়রা। যেখানে সরকার বেড়িবাঁধ রক্ষায় নিরলস প্রচেষ্টা করছে সেখানে জনপ্রতিনিধির এমন আচরণের আমরা এলাকাবাসীর বিচলিত । বিভিন্ন প্রকৃতির দুর্যোগে এই উপকূলের মানুষ পানির ভয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে হয়, তার উপর বেড়িবাঁধ কেটে সমুদ্রের বালু উত্তোলনের মতো এমন পরিবেশ ধ্বংসযজ্ঞ যেন মরার উপর খরার ঘাঁ। পরিবেশের এমন বিপর্যয়ের অচিরেই বিলুপ্ত হবে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি এই আকিলপুর সমুদ্র সৈকত। বালুমহাল আইন : বালুমহাল ও মাঠি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এর ৬২ ধারার ১৫ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী যদি কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বালু বা মাটি উত্তোলনের জন্য বিশেষভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিরেকে বালু বা মাটি উত্তোলন করিলে সেই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী ব্যক্তিবর্গ (এক্সিকিউটিভ বডি) বা তাহাদের সহায়তাকারী কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ অনূর্ধ্ব ২(দুই) বৎসর কারাদন্ড বা ১০ (দশ) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবেন।
পুকুর ভরাট আইন :প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন-২০০০ আইনের ৫ ধারা অনুযায়ী, কোনো পুকুর, জলাশয়, নদী, খাল ইত্যাদি ভরাট করা বেআইনি ও সম্পূর্নভাবে নিষিদ্ধ। যদি কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এ বিধান লঙ্ঘন করলে আইনের ৮ ও ১২ ধারা অনুযায়ী পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এ বিষয়ে মাদার স্টিল শিপইয়ার্ডের মালিক ও পুকুরের স্বতাধিকারী মাষ্টার কাশেমের কাছে বালু উত্তোলন ও পুকুর ভরাটের কথা জানতে চাইলে তিনি স্থানীয় চেয়ারম্যান শওকত আলি জাহাঙ্গীরের সাথে কথা বলতে বলেন। উত্তোলনের সামগ্রিক যন্ত্রাংশ চেয়ারম্যানের এবং তিনি উত্তোলন করছে বলে অভিযোগ করে বলেন সবকিছু চেয়ারম্যানের দায়িত্বে যা বলার উনার সাথে বলুন। উল্লেখ যে এর আগেও মাষ্টার কাশেম অবৈধ বালু উত্তোলনের দায়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের মামলার জালে ফাঁসেন । খালাস পেয়ে আবারও একই কাজে লিপ্ত হন তিনি । চেয়ারম্যান শওকত আলি জাহাঙ্গীর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি বালু উত্তোলন করছি কথাটি সত্য নয়। তবে আমার ড্রেজারের ব্যবসা রয়েছে। মূলত আমার ভাই মোহাম্মদ মঞ্জু এসবের দেখাশোনা করে। তবে আমি যতটুকু জানি বালি উত্তোলনে সংশিষ্ট দপ্তরের অনুমতি আছে। তবে তা দেখালেও,অনুমিত সেই কাগজপত্রের সাথে কাজের কোন মিল নেই। সরকারি বেড়িবাঁধ কেটে সমুদ্র থেকে বালু উত্তোলন করে পুকুর ভরাটের মতো পরিবেশ বিপর্যয় কান্ডে জনপ্রতিনিধি হিসাবে তাঁর ভূমিকা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি এর কোন সদুওর দিতে পারেনি।
উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা শাহাদাৎ হোসেন ও ভূমি কর্মকর্তা আশরাফুল আলম কে দিন-রাত সংযোগ পেতে মুঠোফোনে একাধিক চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। পরিবেশ অধিদপ্তর চট্রগ্রাম কর্মকর্তা ফেরদৌস বলেন, আমাদের একটা টিম এই যায়গাটা পরিদর্শন করে এসেছেন, আমারা বিষয়টা খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করিবো।
আপনার মতামত লিখুন :