Dhaka ০১:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫, ১২ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝিকরগাছায় অবৈধভাবে মাটি কেটে টাকার পাহাড় গড়ছেন মাটিখেকোর দল

  • Reporter Name
  • Update Time : ১১:৫৮:১৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ৫২ Time View

শাহাবুদ্দিন মোড়ল : যশোরের ঝিকরগাছায় অদৃশ্য ক্ষমতার দাপট এবং বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে জমি খেকো বা ভূমিদস্যু এক চক্র। কোন প্রকার সরকারি অনুমোদন বা নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ফসলী জমি, বিল থেকে হাজার হাজার ট্রাক মাটি কেটে এলাকায় বিভিন্ন ভাটায় বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে এই চক্রের বিরুদ্ধে। প্রতিনিয়ত মাটি বোঝাই ট্রাক চলাচলের ফলে নষ্ট হতে বসেছে কাঁচা পাঁকা সড়ক, জনসাধারণের যাতায়াতের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে এসকল সড়ক, প্রতিনিয়ত ঘটছে দূর্ঘটনা, হচ্ছে প্রাণহানি।

অভিযোগ উঠেছে অবৈধভাবে এ সকল জমি থেকে মাটি কেটে কোটি টাকার পাহাড় গড়ছেন এই চক্র। উপজেলা প্রশাসন থেকে অবৈধ ইটভাটা, মাটি ও বালু উত্তোলনে অভিযান পরিচালনা করলেও প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে হায়দার চক্রের প্রধান হায়দার (২৮) সহ আরও কয়েকজন মিলে মাটির রমরমা ব্যবসা করছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। প্রতিবাদ করলে স্থানীয়দেরও হুমকি ধামকি এবং ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে দমিয়ে রাখেন তারা। ফলে ভয়ে মুখ খুলতে চাননা এলাকাবাসীও।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে পাঁচ বছর যাবৎ মাটি কেটে বিক্রি করেন ঝিকরগাছা উপজেলার নির্বাসখোলা ইউনিয়নের নোয়ালি গ্রামের হায়দার। ফসলী জমি ও পুকুর খননের নামে মাটি কেটে ইট ভাটায় বিক্রি করেন তিনি। কৃষকদের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে ও মাছ চাষে উদ্বুদ্ধ করে স্বার্থ হাসিল করেন। শুধু হায়দার নন তার সাথে জড়িত আরও কয়েকজন, মাশোহারা দেন বিভিন্ন মহলকে। এই চক্রে আরও আছে হাজিরালি মহিলা কলেজ মোড়ের সাহেব আলী, ঝিকরগাছা পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ইউনুস আলী, পানিসারা ইউনিয়নের কাউরিয়া ঢালিপাড়ার তরিকুল ঢালি, তুহিন হোসেন, আবু সাঈদ, শিমুলিয়া ইউনিয়নের মধুখালি গ্রামের সুনীল ঘোষ, বাঁকড়া অঞ্চলের রাজ্জাক বিশ্বাস, ইয়াকুব, আজিজ শানা, শফি মেম্বার, সুমন, মিন্টু সহ আরও কয়েকজন। এরা সবাই মিলে সমগ্র ঝিকরগাছা উপজেলা ব্যাপী তৈরি করেছে “হায়দার চক্র”। আতঙ্কের নাম হায়দার চক্রটি বর্তমানে উপজেলার বিভিন্ন এলাকাগুলো থেকে অবৈধভাবে মাটি ও বালু বিক্রির কাজ করে আসছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, হায়দারকে কেউ কিছু বলতে পারে না। স্থানীয় বা প্রশাসনের কেউ কিছু বলতে আসলে স্থানীয় সংবাদিক বা প্রভাবশালী রাজনীতিবিদের আত্মীয় পরিচয় দেন তিনি। কি এমন অদৃশ্য ক্ষমতা আছে তার যার জোরে তিনি প্রশাসনের চোখের সামনে এ অবৈধ ব্যবসা করে যাচ্ছেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মাটি ব্যবসায়ী হায়দার আলী বলেন, ‘আমি পাঁচ বছর যাবৎ মাটি ব্যবসা করি না। একবছর এই ব্যবসা করি। আমি আর সাইদ এক সাথেই মিলে ব্যবসা করি।’

এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাভিদ সারওয়ার দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘হায়দার সহ সকলের বিষয়ে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে আমার কথা হয়েছে। সংবাদিক ও স্থানীয়দের সহযোগীতার জন্য বলেছি। আমরা দ্রুতই ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

বাসদ ময়মনসিংহ মহানগর শাখার আয়োজনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত

ঝিকরগাছায় অবৈধভাবে মাটি কেটে টাকার পাহাড় গড়ছেন মাটিখেকোর দল

Update Time : ১১:৫৮:১৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

শাহাবুদ্দিন মোড়ল : যশোরের ঝিকরগাছায় অদৃশ্য ক্ষমতার দাপট এবং বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে জমি খেকো বা ভূমিদস্যু এক চক্র। কোন প্রকার সরকারি অনুমোদন বা নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ফসলী জমি, বিল থেকে হাজার হাজার ট্রাক মাটি কেটে এলাকায় বিভিন্ন ভাটায় বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে এই চক্রের বিরুদ্ধে। প্রতিনিয়ত মাটি বোঝাই ট্রাক চলাচলের ফলে নষ্ট হতে বসেছে কাঁচা পাঁকা সড়ক, জনসাধারণের যাতায়াতের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে এসকল সড়ক, প্রতিনিয়ত ঘটছে দূর্ঘটনা, হচ্ছে প্রাণহানি।

অভিযোগ উঠেছে অবৈধভাবে এ সকল জমি থেকে মাটি কেটে কোটি টাকার পাহাড় গড়ছেন এই চক্র। উপজেলা প্রশাসন থেকে অবৈধ ইটভাটা, মাটি ও বালু উত্তোলনে অভিযান পরিচালনা করলেও প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে হায়দার চক্রের প্রধান হায়দার (২৮) সহ আরও কয়েকজন মিলে মাটির রমরমা ব্যবসা করছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। প্রতিবাদ করলে স্থানীয়দেরও হুমকি ধামকি এবং ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে দমিয়ে রাখেন তারা। ফলে ভয়ে মুখ খুলতে চাননা এলাকাবাসীও।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে পাঁচ বছর যাবৎ মাটি কেটে বিক্রি করেন ঝিকরগাছা উপজেলার নির্বাসখোলা ইউনিয়নের নোয়ালি গ্রামের হায়দার। ফসলী জমি ও পুকুর খননের নামে মাটি কেটে ইট ভাটায় বিক্রি করেন তিনি। কৃষকদের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে ও মাছ চাষে উদ্বুদ্ধ করে স্বার্থ হাসিল করেন। শুধু হায়দার নন তার সাথে জড়িত আরও কয়েকজন, মাশোহারা দেন বিভিন্ন মহলকে। এই চক্রে আরও আছে হাজিরালি মহিলা কলেজ মোড়ের সাহেব আলী, ঝিকরগাছা পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ইউনুস আলী, পানিসারা ইউনিয়নের কাউরিয়া ঢালিপাড়ার তরিকুল ঢালি, তুহিন হোসেন, আবু সাঈদ, শিমুলিয়া ইউনিয়নের মধুখালি গ্রামের সুনীল ঘোষ, বাঁকড়া অঞ্চলের রাজ্জাক বিশ্বাস, ইয়াকুব, আজিজ শানা, শফি মেম্বার, সুমন, মিন্টু সহ আরও কয়েকজন। এরা সবাই মিলে সমগ্র ঝিকরগাছা উপজেলা ব্যাপী তৈরি করেছে “হায়দার চক্র”। আতঙ্কের নাম হায়দার চক্রটি বর্তমানে উপজেলার বিভিন্ন এলাকাগুলো থেকে অবৈধভাবে মাটি ও বালু বিক্রির কাজ করে আসছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, হায়দারকে কেউ কিছু বলতে পারে না। স্থানীয় বা প্রশাসনের কেউ কিছু বলতে আসলে স্থানীয় সংবাদিক বা প্রভাবশালী রাজনীতিবিদের আত্মীয় পরিচয় দেন তিনি। কি এমন অদৃশ্য ক্ষমতা আছে তার যার জোরে তিনি প্রশাসনের চোখের সামনে এ অবৈধ ব্যবসা করে যাচ্ছেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মাটি ব্যবসায়ী হায়দার আলী বলেন, ‘আমি পাঁচ বছর যাবৎ মাটি ব্যবসা করি না। একবছর এই ব্যবসা করি। আমি আর সাইদ এক সাথেই মিলে ব্যবসা করি।’

এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাভিদ সারওয়ার দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘হায়দার সহ সকলের বিষয়ে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে আমার কথা হয়েছে। সংবাদিক ও স্থানীয়দের সহযোগীতার জন্য বলেছি। আমরা দ্রুতই ব্যবস্থা গ্রহন করবো।