Dhaka ০৯:০৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫, ১৩ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শেরপুরের নকলায় খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ২৭২ বস্তা চাল উদ্ধার। থানায় মামলা

  • Reporter Name
  • Update Time : ০১:৪৪:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ অগাস্ট ২০২৩
  • ২২২ Time View
জাহাঙ্গীর হোসেন, শেরপুর :
শেরপুরের নকলায় একটি দোকান থেকে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ২৭২ বস্তায় ৮ হাজার ১৬০ কেজি সরকারি চাল উদ্ধার করেছে উপজেলা প্রশাসন।
১৯ আগষ্ট শনিবার রাতে উপজেলার চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের রেহারচর মোড়ে স্থানীয় ব্যবসায়ী মজনু মিয়া ও বাদশা মিয়ার ভাড়া করা একটি ঘর থেকে ওই চাল উদ্ধার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নকলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া উম্মুল বানিন।
মজনু ও বাদশার আরেকজন ব্যবসায়িক পার্টনারের নাম চঞ্চল মিয়া। সে মজনুর ভাতিজা বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায় চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ডিলার শাহ মো. লুৎফর রহমান ও আমিলুন হক মিন্টু। তারা চন্দ্রকোনা মধ্যবাজারে ২টি আলাদা গোডাউনে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল মজুদ রাখেন। কিন্তু চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের হতদরিদ্ররা খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির কার্ড পায়নি। এসব কার্ড বিতরণ করা হয়েছে ধনী ও স্বচ্ছল ব্যাক্তিদের মাঝে। তাই এসব কার্ডের বিপরীতে চাল সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে ডিলাররা কিনে নিয়ে রেজিষ্টারে ভূয়া টিপ/স্বাক্ষর করে ওই চাল তাঁরা কালো বাজারে বিক্রি করে দেয়।
উপজেলা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খন্দকার ইলিয়াস হোসেন জানান ১৮ আগষ্ট শুক্রবার চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার শাহ মো. লুৎফর রহমান ৭৫৩টি কার্ডের বিপরীতে প্রতি মাসে ৩০ কেজি হিসেবে ২ মাসের চাল উত্তোলন করেছেন ৪৫ হাজার ১৮০ কেজি। আমিনুল ইসলাম মিন্টু উত্তোলন করেছেন ৭৫২টি কার্ডের বিপরীতে ৪৫ হাজার ১২০ কেজি। বিষয়টি নিয়ে তিনি নকলা থানায় ৪ জনকে আসামী করে একটি নিয়মিত মামলা করেছেন। উদ্ধারকৃত চাল খাদ্যগুদামে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
চন্দ্রকোনা  ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান গেন্দু জানান খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির কার্ডগুলো হয়েছে ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাজু সাইদ সিদ্দিকীর সময়ে। তাই কার্ড বিতরণের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিয়ে তিনি কোন কথা বলতে চান না। তবে যাদের কাছে চাল পাওয়া গেছে তারা মূলত ব্যবসায়ী। তাঁরা সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে কার্ড কিনে ডিলারের কাছ থেকে চাল উঠিয়ে বিক্রির জন্য দোকানে মজুদ রেখেছেন।
নকলা থানার ওসি (তদন্ত) ইসকান্দার হাবিবুর রহমান জানান রাতেই এবিষয়ে ৪ জনকে আসামী করে একটি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশী অভিযান চলছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া উম্মুল বানিন জানান গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে চন্দ্রকোনা ইউনিয়ের রেহারচর মোড়ে একটি দোকান থেকে অবৈধভাবে মজুদ করা খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ৩০ কেজির ২৭২ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়েছে। পরে এসব চালের জব্দ তালিকা করে প্রচলিত আইনে নকলা থানায় নিয়মিত মামলা করা হয়েছে। ঘটনার সাথে কে বা কারা জড়িত এ বিষয়ে অধিকতর তদন্তের প্রয়োজন। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।
চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের থাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ডিলার লুৎফর রহমান ও আমিনুল হক মুঠোফোনে জানান আমরা স্বচ্ছতার সাথে সুবিধাভোগীদের মাঝে চাল বিতরণ করে থাকি। তবে রেহারচর এলাকা থেকে নকলা উপজেলা প্রশাসন কতৃক উদ্ধারকৃত খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল কোথা থেকে এসেছে তা আমাদের জানা নেই।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

বাসদ ময়মনসিংহ মহানগর শাখার আয়োজনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত

শেরপুরের নকলায় খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ২৭২ বস্তা চাল উদ্ধার। থানায় মামলা

Update Time : ০১:৪৪:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ অগাস্ট ২০২৩
জাহাঙ্গীর হোসেন, শেরপুর :
শেরপুরের নকলায় একটি দোকান থেকে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ২৭২ বস্তায় ৮ হাজার ১৬০ কেজি সরকারি চাল উদ্ধার করেছে উপজেলা প্রশাসন।
১৯ আগষ্ট শনিবার রাতে উপজেলার চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের রেহারচর মোড়ে স্থানীয় ব্যবসায়ী মজনু মিয়া ও বাদশা মিয়ার ভাড়া করা একটি ঘর থেকে ওই চাল উদ্ধার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নকলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া উম্মুল বানিন।
মজনু ও বাদশার আরেকজন ব্যবসায়িক পার্টনারের নাম চঞ্চল মিয়া। সে মজনুর ভাতিজা বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায় চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ডিলার শাহ মো. লুৎফর রহমান ও আমিলুন হক মিন্টু। তারা চন্দ্রকোনা মধ্যবাজারে ২টি আলাদা গোডাউনে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল মজুদ রাখেন। কিন্তু চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের হতদরিদ্ররা খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির কার্ড পায়নি। এসব কার্ড বিতরণ করা হয়েছে ধনী ও স্বচ্ছল ব্যাক্তিদের মাঝে। তাই এসব কার্ডের বিপরীতে চাল সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে ডিলাররা কিনে নিয়ে রেজিষ্টারে ভূয়া টিপ/স্বাক্ষর করে ওই চাল তাঁরা কালো বাজারে বিক্রি করে দেয়।
উপজেলা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খন্দকার ইলিয়াস হোসেন জানান ১৮ আগষ্ট শুক্রবার চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার শাহ মো. লুৎফর রহমান ৭৫৩টি কার্ডের বিপরীতে প্রতি মাসে ৩০ কেজি হিসেবে ২ মাসের চাল উত্তোলন করেছেন ৪৫ হাজার ১৮০ কেজি। আমিনুল ইসলাম মিন্টু উত্তোলন করেছেন ৭৫২টি কার্ডের বিপরীতে ৪৫ হাজার ১২০ কেজি। বিষয়টি নিয়ে তিনি নকলা থানায় ৪ জনকে আসামী করে একটি নিয়মিত মামলা করেছেন। উদ্ধারকৃত চাল খাদ্যগুদামে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
চন্দ্রকোনা  ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান গেন্দু জানান খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির কার্ডগুলো হয়েছে ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাজু সাইদ সিদ্দিকীর সময়ে। তাই কার্ড বিতরণের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিয়ে তিনি কোন কথা বলতে চান না। তবে যাদের কাছে চাল পাওয়া গেছে তারা মূলত ব্যবসায়ী। তাঁরা সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে কার্ড কিনে ডিলারের কাছ থেকে চাল উঠিয়ে বিক্রির জন্য দোকানে মজুদ রেখেছেন।
নকলা থানার ওসি (তদন্ত) ইসকান্দার হাবিবুর রহমান জানান রাতেই এবিষয়ে ৪ জনকে আসামী করে একটি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশী অভিযান চলছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া উম্মুল বানিন জানান গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে চন্দ্রকোনা ইউনিয়ের রেহারচর মোড়ে একটি দোকান থেকে অবৈধভাবে মজুদ করা খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ৩০ কেজির ২৭২ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়েছে। পরে এসব চালের জব্দ তালিকা করে প্রচলিত আইনে নকলা থানায় নিয়মিত মামলা করা হয়েছে। ঘটনার সাথে কে বা কারা জড়িত এ বিষয়ে অধিকতর তদন্তের প্রয়োজন। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।
চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের থাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ডিলার লুৎফর রহমান ও আমিনুল হক মুঠোফোনে জানান আমরা স্বচ্ছতার সাথে সুবিধাভোগীদের মাঝে চাল বিতরণ করে থাকি। তবে রেহারচর এলাকা থেকে নকলা উপজেলা প্রশাসন কতৃক উদ্ধারকৃত খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল কোথা থেকে এসেছে তা আমাদের জানা নেই।