Dhaka ০২:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫, ১২ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মান্দার রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড়

  • Reporter Name
  • Update Time : ০২:১৫:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ জুন ২০২৩
  • ১০৭ Time View
তানোর(রাজশাহী)প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর তানোরের সীমান্তবর্তী নওগাঁর মান্দায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এবং  উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোল্লা এমদাদুল হকের কাছে ঘুষের টাকা ফেরত চাওয়ায় তিনি মদ্যপ অবস্থায়, ইউপি ছাত্রলীগের সভাপতি জামাল উদ্দিনকে অশ্লীল ভাষায় গালাগালি ও শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত ১৩ জুন মঙ্গলবার উপজেলা পরিষদ চত্ত্বর
প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয়ে এই ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় একইদিন ভারশোঁ ইউপি ছাত্রলীগের সভাপতি জামাল উদ্দিন বাদি হয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানকে বিবাদী করে মান্দা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। এদিকে এখবর ছড়িয়ে পড়লে মান্দার রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে, উঠেছে সমালোচনার ঝড়,  বইছে মুখরুচোক নানা গুঞ্জন, জনমনেও  দেখা দিয়েছে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া। অনেকে বলছে, যিনি দায়িত্বশীল একজন জনপ্রতিনিধি হয়েও, মদ্যপ অবস্থায় নিজ দলের একজন দায়িত্বশীল ছাত্র নেতার সঙ্গে এমন আচরণ করতে পারেন।তিনি তো নৈতিকভাবে  উপজেলা চেয়ারম্যানের মতো দায়িত্বশীল পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, বিগত ২০২২ সালে উপজেলার ভারশোঁ ইউনিয়নের
(ইউপি) মুর্শিদপুর ইসলামিয়া ফাযিল মাদ্রাসায় অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটরের শূণ্য পদ পুরুণে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করাহয় । মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মোল্লা এমদাদুল হক ওই পদে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে
ইউপি ছাত্রলীগের সভাপতি জামাল উদ্দিনের কাছে ১৫ লাখ টাকা চাই। এরই প্রেক্ষিতে প্রথম কিস্তিতে চেয়ারম্যানকে চার লাখ টাকা দেন ছাত্রলীগ নেতা জামাল। কিন্ত্ত নতুন পরিপত্র অনুযায়ী সভাপতির যোগ্যতা হারায় উপজেলা চেয়ারম্যান। তবে তিনি কৌশলে তার কন্যা উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান মাহাবুবা সিদ্দিকা রুমাকে সভাপতি করেন। রুমা সভাপতি হয়েই জামালের কাছে থেকে চাকরির কথা বলে দুই লাখ টাকা নেন। এদিকে সভাপতির টাকা নেয়ার খবর জানতে পেরে জামালের কাছে অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ ও মাদরাসা কমিটির সহ-সভাপতি মজিবর রহমানও দুই লাখ টাকা নেন। কিন্ত্ত জামালকে নয় তার পরিবর্তে অন্যজনের কাছে থেকে কুড়ি লাখ টাকা নিয়ে তাকে নিয়োগের পরিকল্পনা করে কমিটি। এদিকে গত ১৩ জুন মঙ্গলবার জামাল উদ্দিন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছে গিয়ে প্রকৃত ঘটনা জানতে চাইলে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার জন্ম দেন চেয়ারম্যান। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এসময় চেয়ারম্যান মোল্লা এমদাদুল হক মদ্যপ অবস্থায় জামালকে অশ্লীল ভাষায় গালাগালি ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোল্লা এমদাদুল হক জানান, তিনি কোন টাকা নেননি  এবং জামালকে কোন লাঞ্চিত বা মারধর করা হয়নি। আমি অসুস্থ মদ সেবনের কোন প্রশ্নই আসে না, ভারশোঁ ইউপির চেয়ারম্যান এসব করিয়ে আমার সম্মানহানি করছে। এবিষয়ে মাদরাসার সভাপতি ও ভাইস চেয়ারম্যান মাহাবুবা সিদ্দিকা রুমা বলেন, তিনি কোন টাকা পয়সা নেননি এবং জামালকে ভালো ভাবে চেনেন না, শুধু জানেন এইনামের একজন ছেলে ছাত্রলীগ করেন। এবিষয়ে অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ জানান, তিনি জামালের কাছ থেকে কোন টাকা আদায় করিনি। আপনি ও সহসভাপতি ১ লাখ টাকা করে ২ লাখ টাকা নিয়েছেন এবং ভারশোঁ ইউপি চেয়ারম্যানের সামনে সেটার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ আছে জানতে চাইলে তিনি জানান এসব অপোপ্রচার, এখনো নিয়োগ বোর্ড হয়নি, যোগ্যতা মোতাবেক চাকরি দেওয়া হবে। তবে দুই সভাপতিই টাকা নিয়েছেন বলে
তিনি শোনেছেন মাত্র। এবিষয়ে ভারশোঁ ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সুমন বলেন, টাকা লেনদেন আমার সামনে হয়েছে, অস্বীকার করার কোন উপায় নেই সিসি ক্যামেরা চেক করলেই ধরা পড়বে। এবিষয়ে অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শামিম জানান অভিযোগ হয়েছে, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এবিষয়ে মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লায়লা আঞ্জুমান বানু বলেন, ঘটনা সম্পর্কে অজানা। পরিষদ দপ্তরে লাঞ্চিত বা মারধর করা যায় কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

বাসদ ময়মনসিংহ মহানগর শাখার আয়োজনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত

মান্দার রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড়

Update Time : ০২:১৫:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ জুন ২০২৩
তানোর(রাজশাহী)প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর তানোরের সীমান্তবর্তী নওগাঁর মান্দায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এবং  উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোল্লা এমদাদুল হকের কাছে ঘুষের টাকা ফেরত চাওয়ায় তিনি মদ্যপ অবস্থায়, ইউপি ছাত্রলীগের সভাপতি জামাল উদ্দিনকে অশ্লীল ভাষায় গালাগালি ও শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত ১৩ জুন মঙ্গলবার উপজেলা পরিষদ চত্ত্বর
প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয়ে এই ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় একইদিন ভারশোঁ ইউপি ছাত্রলীগের সভাপতি জামাল উদ্দিন বাদি হয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানকে বিবাদী করে মান্দা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। এদিকে এখবর ছড়িয়ে পড়লে মান্দার রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে, উঠেছে সমালোচনার ঝড়,  বইছে মুখরুচোক নানা গুঞ্জন, জনমনেও  দেখা দিয়েছে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া। অনেকে বলছে, যিনি দায়িত্বশীল একজন জনপ্রতিনিধি হয়েও, মদ্যপ অবস্থায় নিজ দলের একজন দায়িত্বশীল ছাত্র নেতার সঙ্গে এমন আচরণ করতে পারেন।তিনি তো নৈতিকভাবে  উপজেলা চেয়ারম্যানের মতো দায়িত্বশীল পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, বিগত ২০২২ সালে উপজেলার ভারশোঁ ইউনিয়নের
(ইউপি) মুর্শিদপুর ইসলামিয়া ফাযিল মাদ্রাসায় অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটরের শূণ্য পদ পুরুণে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করাহয় । মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মোল্লা এমদাদুল হক ওই পদে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে
ইউপি ছাত্রলীগের সভাপতি জামাল উদ্দিনের কাছে ১৫ লাখ টাকা চাই। এরই প্রেক্ষিতে প্রথম কিস্তিতে চেয়ারম্যানকে চার লাখ টাকা দেন ছাত্রলীগ নেতা জামাল। কিন্ত্ত নতুন পরিপত্র অনুযায়ী সভাপতির যোগ্যতা হারায় উপজেলা চেয়ারম্যান। তবে তিনি কৌশলে তার কন্যা উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান মাহাবুবা সিদ্দিকা রুমাকে সভাপতি করেন। রুমা সভাপতি হয়েই জামালের কাছে থেকে চাকরির কথা বলে দুই লাখ টাকা নেন। এদিকে সভাপতির টাকা নেয়ার খবর জানতে পেরে জামালের কাছে অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ ও মাদরাসা কমিটির সহ-সভাপতি মজিবর রহমানও দুই লাখ টাকা নেন। কিন্ত্ত জামালকে নয় তার পরিবর্তে অন্যজনের কাছে থেকে কুড়ি লাখ টাকা নিয়ে তাকে নিয়োগের পরিকল্পনা করে কমিটি। এদিকে গত ১৩ জুন মঙ্গলবার জামাল উদ্দিন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছে গিয়ে প্রকৃত ঘটনা জানতে চাইলে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার জন্ম দেন চেয়ারম্যান। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এসময় চেয়ারম্যান মোল্লা এমদাদুল হক মদ্যপ অবস্থায় জামালকে অশ্লীল ভাষায় গালাগালি ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোল্লা এমদাদুল হক জানান, তিনি কোন টাকা নেননি  এবং জামালকে কোন লাঞ্চিত বা মারধর করা হয়নি। আমি অসুস্থ মদ সেবনের কোন প্রশ্নই আসে না, ভারশোঁ ইউপির চেয়ারম্যান এসব করিয়ে আমার সম্মানহানি করছে। এবিষয়ে মাদরাসার সভাপতি ও ভাইস চেয়ারম্যান মাহাবুবা সিদ্দিকা রুমা বলেন, তিনি কোন টাকা পয়সা নেননি এবং জামালকে ভালো ভাবে চেনেন না, শুধু জানেন এইনামের একজন ছেলে ছাত্রলীগ করেন। এবিষয়ে অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ জানান, তিনি জামালের কাছ থেকে কোন টাকা আদায় করিনি। আপনি ও সহসভাপতি ১ লাখ টাকা করে ২ লাখ টাকা নিয়েছেন এবং ভারশোঁ ইউপি চেয়ারম্যানের সামনে সেটার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ আছে জানতে চাইলে তিনি জানান এসব অপোপ্রচার, এখনো নিয়োগ বোর্ড হয়নি, যোগ্যতা মোতাবেক চাকরি দেওয়া হবে। তবে দুই সভাপতিই টাকা নিয়েছেন বলে
তিনি শোনেছেন মাত্র। এবিষয়ে ভারশোঁ ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সুমন বলেন, টাকা লেনদেন আমার সামনে হয়েছে, অস্বীকার করার কোন উপায় নেই সিসি ক্যামেরা চেক করলেই ধরা পড়বে। এবিষয়ে অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শামিম জানান অভিযোগ হয়েছে, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এবিষয়ে মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লায়লা আঞ্জুমান বানু বলেন, ঘটনা সম্পর্কে অজানা। পরিষদ দপ্তরে লাঞ্চিত বা মারধর করা যায় কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।