Dhaka ০২:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫, ১২ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডাক্তারের কক্ষে আয়ার বসবাস ৫ মাস ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত ডাক্তার

  • Reporter Name
  • Update Time : ০১:৫৫:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ জুন ২০২৩
  • ৮৬০ Time View

সন্দ্বীপ( চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি।

 

 

 

চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার হারামিয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে ৫ মাস ধরে আসছেন না কর্মরত মেডিকেল অফিসার ডাঃ সায়েফ উদ্দীন সোহাগ। দুই মাস ধরে মেডিকেল অফিসারের নেমপ্লেট লাগানো মেডিকেল অফিসারের জন্য নির্ধারিত কক্ষে সপরিবারে বসবাস করছেন আয়া তৃষ্ণা রাণী শীল। কর্মস্থলে না আসলেও উপজেলার বেসরকারি হাসপাতাল ও বিভিন্ন হাটবাজারে প্রাইভেট চেম্বারে নিয়মিত রোগী দেখছেন ডাঃ সায়েফ উদ্দিন সোহাগ।

সরেজমিনে বুধবার ১ জুন দুপুর ১২ টায়
হারামিয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় নেই মেডিকেল অফিসার। মেডিকেল অফিসারের নেমপ্লেট লাগানো মেডিকেল অফিসারের জন্য নির্ধারিত কক্ষে আসবাপপত্র পেতে সপরিবারে বসবাস করছেন আয়া তৃষ্ণা রাণী শীল। কক্ষের ভেতর গ্যাস সিলিন্ডার, চুলাসহ রান্নাবান্নার নানান সরঞ্জাম।

কক্ষের ভেতর প্রবেশ করতে চাইলে আয়ার মা পরিচয় বাঁধা দেন একজন। কিছুক্ষণ পর ভেতর থেকে বেরিয়ে আসেন আয়া তৃষ্ণা রাণী শীল।
তিনি বলেন, ‘ফেব্রুয়ারি মাস থেকে আমি এখানে কর্মরত আছি। এপর্যন্ত কোন ডাক্তারকে এখানে আসতে দেখিনি। রুমটা দীর্ঘদিন খালি পড়ে থাকায় আমি পরিবার নিয়ে বসবাস করছি। আমাকে এখন ছেড়ে দিতে বললে এখন ছেড়ে দেবো। দুতলায় আমাদের থাকার ব্যবস্থা আছে।সেখানে পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিক ও পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা থাকেন।

স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রবেশের মুখে দীর্ঘদিন ধরে মুদি দোকান করেন স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রহিম। তিনি বলেন, এখানে যদি কোন ডাক্তার আসতো কেউ না জানলেও আমি জানতাম। সকাল- সন্ধ্যা আমি এখানে থাকি।দোকানের সামনেই আমার বাড়ি। কোনদিন এখানে কোন ডাক্তার আসে না। এখানে যে একজন ডাক্তারের পোস্টিং আছে সেটা আপনাদের মুখে প্রথম শুনলাম।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর থেকে স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন ডাঃ সাইফ উদ্দীন সোহাগ। মেডিকেল অফিসারের পাশাপাশি কর্মরত আছেন দুজন পরিবার কল্যাণ পরিদর্শক। মেডিকেল অফিসারের বিষয়ে জানতে চাইলে পরিবার কল্যান পরিদর্শক(এফ পি আই) রানা মজুমদার বলেন, এখানে আগে মেডিকেল অফিসার ছিলেন সায়েফ উদ্দীন সোহাগ। এখন আসেন না। কেন আসেন না সঠিক জানি মা। মনে হয় পড়াশোনার জন্য বিদেশ যাবেন।

কর্মস্থলে অনুপস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডাঃ সায়েফ উদ্দীন সোহাগ বলেন, আমি কোনপ্রকার ছুটিতে নেই। বর্তমানে চট্টগ্রাম আছি। আগামীকাল সন্দ্বীপ আসলে আপনাদের সঙ্গে দেখা করবো।

স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির ব্যবস্থাপনা কমিটির সহ সভাপতি হারামিয়া ইউনিয়ন ১,২,৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পারুল বেগম বলেন, স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রতিমাসেই মিটিংয়ে যায়। ডাঃ সাইফ উদ্দীন সোহাগকে আমি চিনি। কিন্তু কখনো তাকে এখানে দেখিনি। একজন ডাক্তার যে আছে সেটাও জানি না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মানস বিশ্বাস বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিলো না। আমি ঢাকায় ট্রেনিংয়ে আছি। সন্দ্বীপ আসলে এ বিষয়ে আলোচনা করবো।

চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, বিষয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার উচিত ছিলো আমাকে জানানো। আপনারা আমাকে লিখিত একটা অভিযোগ দেন। আমি বিষয়টি বিভাগীয় পরিচালকে জানাবো।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

বাসদ ময়মনসিংহ মহানগর শাখার আয়োজনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত

ডাক্তারের কক্ষে আয়ার বসবাস ৫ মাস ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত ডাক্তার

Update Time : ০১:৫৫:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ জুন ২০২৩

সন্দ্বীপ( চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি।

 

 

 

চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার হারামিয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে ৫ মাস ধরে আসছেন না কর্মরত মেডিকেল অফিসার ডাঃ সায়েফ উদ্দীন সোহাগ। দুই মাস ধরে মেডিকেল অফিসারের নেমপ্লেট লাগানো মেডিকেল অফিসারের জন্য নির্ধারিত কক্ষে সপরিবারে বসবাস করছেন আয়া তৃষ্ণা রাণী শীল। কর্মস্থলে না আসলেও উপজেলার বেসরকারি হাসপাতাল ও বিভিন্ন হাটবাজারে প্রাইভেট চেম্বারে নিয়মিত রোগী দেখছেন ডাঃ সায়েফ উদ্দিন সোহাগ।

সরেজমিনে বুধবার ১ জুন দুপুর ১২ টায়
হারামিয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় নেই মেডিকেল অফিসার। মেডিকেল অফিসারের নেমপ্লেট লাগানো মেডিকেল অফিসারের জন্য নির্ধারিত কক্ষে আসবাপপত্র পেতে সপরিবারে বসবাস করছেন আয়া তৃষ্ণা রাণী শীল। কক্ষের ভেতর গ্যাস সিলিন্ডার, চুলাসহ রান্নাবান্নার নানান সরঞ্জাম।

কক্ষের ভেতর প্রবেশ করতে চাইলে আয়ার মা পরিচয় বাঁধা দেন একজন। কিছুক্ষণ পর ভেতর থেকে বেরিয়ে আসেন আয়া তৃষ্ণা রাণী শীল।
তিনি বলেন, ‘ফেব্রুয়ারি মাস থেকে আমি এখানে কর্মরত আছি। এপর্যন্ত কোন ডাক্তারকে এখানে আসতে দেখিনি। রুমটা দীর্ঘদিন খালি পড়ে থাকায় আমি পরিবার নিয়ে বসবাস করছি। আমাকে এখন ছেড়ে দিতে বললে এখন ছেড়ে দেবো। দুতলায় আমাদের থাকার ব্যবস্থা আছে।সেখানে পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিক ও পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা থাকেন।

স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রবেশের মুখে দীর্ঘদিন ধরে মুদি দোকান করেন স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রহিম। তিনি বলেন, এখানে যদি কোন ডাক্তার আসতো কেউ না জানলেও আমি জানতাম। সকাল- সন্ধ্যা আমি এখানে থাকি।দোকানের সামনেই আমার বাড়ি। কোনদিন এখানে কোন ডাক্তার আসে না। এখানে যে একজন ডাক্তারের পোস্টিং আছে সেটা আপনাদের মুখে প্রথম শুনলাম।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর থেকে স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন ডাঃ সাইফ উদ্দীন সোহাগ। মেডিকেল অফিসারের পাশাপাশি কর্মরত আছেন দুজন পরিবার কল্যাণ পরিদর্শক। মেডিকেল অফিসারের বিষয়ে জানতে চাইলে পরিবার কল্যান পরিদর্শক(এফ পি আই) রানা মজুমদার বলেন, এখানে আগে মেডিকেল অফিসার ছিলেন সায়েফ উদ্দীন সোহাগ। এখন আসেন না। কেন আসেন না সঠিক জানি মা। মনে হয় পড়াশোনার জন্য বিদেশ যাবেন।

কর্মস্থলে অনুপস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডাঃ সায়েফ উদ্দীন সোহাগ বলেন, আমি কোনপ্রকার ছুটিতে নেই। বর্তমানে চট্টগ্রাম আছি। আগামীকাল সন্দ্বীপ আসলে আপনাদের সঙ্গে দেখা করবো।

স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির ব্যবস্থাপনা কমিটির সহ সভাপতি হারামিয়া ইউনিয়ন ১,২,৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পারুল বেগম বলেন, স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রতিমাসেই মিটিংয়ে যায়। ডাঃ সাইফ উদ্দীন সোহাগকে আমি চিনি। কিন্তু কখনো তাকে এখানে দেখিনি। একজন ডাক্তার যে আছে সেটাও জানি না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মানস বিশ্বাস বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিলো না। আমি ঢাকায় ট্রেনিংয়ে আছি। সন্দ্বীপ আসলে এ বিষয়ে আলোচনা করবো।

চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, বিষয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার উচিত ছিলো আমাকে জানানো। আপনারা আমাকে লিখিত একটা অভিযোগ দেন। আমি বিষয়টি বিভাগীয় পরিচালকে জানাবো।