জসীমউদ্দীন ইতি ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ
বাড়ির ছাদে কৃষি বাগান করার কথা প্রায় শোনা যায়। তবে এবার বিকল্প পদ্ধতিতে বাড়ির ছাদে উচ্চমূল্যেল রঙিন
মাছ চাষ করে তাক লাগান ঠাকুরগাঁওয়ের তরুণ উদ্যোক্তা গোলাম মর্তুজা মনা।
এতে প্রতিমাসে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা আয় হয় তার। ছাদের উপর বিশেষ উপায়ে
বাহারি রঙ ও জাতের অ্যাকুরিয়ামে মাছ এবং পোনা চাষ করছেন তিনি।
বাণিজ্যিকভাবে মাছ ও পোনা উৎপাদন করে তা জেলার বিভিন্ন অ্যাকুরিয়ামের
দোকানে সরবরাহ করেন। ঠাকুরগাঁও পৌরশহরের সরকারপাড়ার বাসিন্দা গোলাম
মর্তুজা মনা। পেশায় তিনি একজন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক। আড়াই বছর আগে শখের
বসে শুরু করেন রঙিন মাছ চাষ। বাজারে চাহিদা থাকায় বছর ঘুরতে না ঘুরতে
সফলতার মুখ দেখেন তিনি। স্বল্প সময়ে তার এমন সফলতা দেখে রঙিন মাছ চাষে
আগ্রহী হয়ে উঠছেন অনেকে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির ছাদে বিশেষ পদ্ধতিতে চৌবাচ্চায় রাখা হয়েছে
পানি। স্বচ্ছ পানিতে ভাসছে নানা রঙের মাছ। শখের বসে চাষ করা মনার এ ছাদে
চাষ হচ্ছে গাপ্পি, গোল্ড ফিশ, কমেট, কই কার্ভ, ওরেন্টা গোল্ড, সিল্কি
কই,মলি ও গাপটিসহ ২০ প্রজাতির রঙিন মাছ। এখন এলাকার মানুষ ছাড়াও মৎস্য
কর্মকর্তারা তার এই মাছ দেখতে আসছেন। অনেকে খামার দেখতে এসে মাছ কিনেও
নিয়ে যাচ্ছেন।জেলা মৎস্য অফিসের দেওয়া তথ্য মতে, জেলায় বিদেশি জাতের রঙিন
মাছ চাষ করেন ২০ জন উদ্যোক্তা। ইতোমধ্যে এ মাছ চাষে সফলও হয়েছেন অনেকে।
আর ক্রমশ বাড়ছে এ মাছ চাষের প্রবণতা। প্রতি মাসে গড়ে মাত্র ৫০০ টাকার
খাবার খরচ হয় মনার। খামার থেকে পাইকারি দরে মাছ বিক্রির পাশাপাশি বিক্রি
করা হয় খুচরা দরেও। রঙিন মাছ দেখতে আসা আশরাফুল ইসলাম বলেন, মনা ভাই ছাদে
মাছ চাষ করেছে শুনে দেখতে এসেছি। এত অল্প পরিসরে মাছ চাষ করেও যে আয় করা
সম্ভব জানা ছিল না। উনার কাছে আমিও এই মাছ চাষ সম্পর্কে জেনে নিব।
মাছ কিনতে আসা শিরিন আক্তার বলেন, আমার বাসায় অ্যাকুরিয়াম আছে। আমি মনা
ভাইয়ের এখান থেকে মাছ নিয়ে যাই। রঙিন মাছ ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।
সফল উদ্যোক্তা গোলাম মর্তুজা মনা বলেন, বাড়ির ছাদকে কাজে লাগানোর দৃঢ়
প্রত্যয়ে শখের বসে রঙিন মাছ চাষ শুরু করি। অনেক অল্প সময়ের মধ্যে সফলতা
পেয়েছি। মৎস্য অধিদপ্তর ও সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে মাছ চাষের পরিধি
বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। সেই সঙ্গে কেউ এ ধরনের মাছ চাষে আগ্রহী হলে আমি
সার্বিক সহযোগিতা করবো।
ঠাকুরগাঁও জেলা মৎস্যসম্পদ কর্মকর্তা খালিদুজ্জামান বলেন, জেলায় আগের
চেয়ে বেড়েছে বিদেশি প্রজাতির রঙিন মাছ চাষ। উদ্যোক্তা গোলাম মর্তুজার
পাশাপাশি নতুন কেউ রঙিন মাছ চাষ আগ্রহী হলে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।