Dhaka ১০:২৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫, ১৩ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইনডেক্সধারীদের জন্য ৭ নং পয়েন্ট বহাল রেখে দ্রুত আবেদনের সুযোগ চাই ও আলাদা গণবিজ্ঞপ্তি চাই

  • Reporter Name
  • Update Time : ০২:০৪:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ জুন ২০২৩
  • ৭৪২ Time View
মোঃ মিজানুর রহমান স্টাফ রিপোর্টার
ইনডেক্সধারী শিক্ষকবৃন্দ বিশেষ করে এনটিআরসিএ এর মাধ্যমে সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকরা আর্থিক অসচ্ছলতা, মানসিক সমস্যা, পারিবারিক বিচ্ছেদসহ বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত। ২০১৬ সাল থেকে এনটিআরসিএ গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক সুপারিশ করে আসছে। ১ম গণবিজ্ঞপ্তিতে উপজেলা ভিত্তিক শিক্ষক সুপারিশ করার ফলে নিজ উপজেলায় শূন্য পদ না থাকায় হাজার হাজার নিবন্ধনধারী বেকারই থেকেছিলো।
২য় ও ৩য় গণবিজ্ঞপ্তিতে মেরিট পজিশন অনুযায়ী জাতীয় পর্যায়ে শিক্ষকদের সুপারিশ করা হয়েছিলো। এনটিআরসিএ এর নিয়োগ পরিপত্র ২০১৫ এর ৭ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী একজন ইনডেক্সধারী শিক্ষক যেকোনো বয়সে পরবর্তী যেকোনো গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের মাধ্যমে মেরিট পজিশন অনুযায়ী সমপদে প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন করতে পারবেন। তাই ২য় ও ৩য় গণবিজ্ঞপ্তিতে অনেক নিবন্ধনধারী নিজ এলাকায় শূন্য পোস্ট না থাকায় বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পাবার জন্য ইচ্ছে করেই দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে আবেদন করে সুপারিশ পেয়েছিলো। কিন্তু হঠাৎ করে ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে ইনডেক্সধারীদের আবেদনের সুযোগ বন্ধ করে দেয়ার ফলে ইনডেক্সধারীদের জীবন বেকারত্বের অভিশাপ থেকেও বেশি ভয়ংকর অভিশাপে পরিণত হয়েছে। স্বল্প বেতনে চাকরি করার কারনে পুরুষ শিক্ষকরা বাড়িতে টাকা পাঠাতে পারে না। এমনকি স্ত্রীকে সাথে এনে রাখতে পারে না। ফলে স্ত্রীর সাথে সম্পর্কের অবনতি ঘটতে থাকে। অনেক সময় এমন সম্পর্কগুলো বিবাহ বিচ্ছেদে রূপ নিচ্ছে। দূরে চাকরি করার কারনে অবিবাহিত পুরুষ শিক্ষকদের কাছে কন্যার মা-বাবা কন্যাকে পাত্রস্থ করে না। দূর দূরান্তে চাকরি করার কারনে অবিবাহিত নারী শিক্ষকদের বয়স বেড়ে যাচ্ছে কিন্তু তাদের বিয়ে হচ্ছে না। ফলে বয়স বেড়ে যাচ্ছে তবুও ব্যাচেলর জীবন যাপন করতে হচ্ছে দূর দূরান্তে চাকরিরত শিক্ষকদের।
বিবাহিত নারী শিক্ষকদের মধ্যে অনেকের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে স্বামী ছেড়ে দূরে চাকরি করার কারনে। এখনো অনেক নারী শিক্ষক আছে যাদের সংসার ভাঙ্গার মতো অবস্থা। নারী শিক্ষকদের নিরাপত্তার অভাব রয়েছে। পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে শিক্ষকরা তাদেরকে সেবা করতে পারে না। পরিবারের মৃত ব্যক্তিকে শেষ দেখাও দেখতে পারে না।
মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষকরা নিজ সন্তানদের মানুষ করা তো দূরের কথা সন্তানের কাছে থাকতে পারে না। সন্তানগুলো হয় বাবার কাছে থাকে না হয় মায়ের কাছে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে সন্তানগুলো বড় হচ্ছে কাজের মহিলাদের কাছে।
৩য় গণবিজ্ঞপ্তিতে কিছু ইনডেক্সধারী শিক্ষক যোগদান না করার কারনে ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের আবেদনের সুযোগ বন্ধ করা হয়েছে। যোগদান বাধ্যতামূলক এবং যোগদান না করলে পূর্বের ইনডেক্স বাতিল হয়ে যাবে এমন শর্ত সাপেক্ষে যদি আবেদন করার সুযোগ দেয়া হতো তাহলেও ইনডেক্সধারীদের সমস্যা অনেকটা দূর হতো।
যেহেতু বদলি একটি জটিল প্রক্রিয়া এবং বদলি চালু হলে সরকারের আর্থিক ক্ষতি হবে, তাই ইনডেক্সধারীদের জন্য আলাদা বিজ্ঞপ্তি দিলে কারো কোনো ক্ষতি হবে না। ইনডেক্সধারীদের আলাদা বিজ্ঞপ্তি দিলে এর কার্যক্রম শেষ করতে খুব বেশি সময় লাগবে না কারণ ইনডেক্সধারীদের পুলিশ ভেরিফিকেশান দরকার নেই।  ইনডেক্সধারীদের শূন্য পোস্টগুলোতে বেকারদের জন্য বিজ্ঞপ্তি দিলে বেকারদেরও উপকার হবে। ইনডেক্সধারীদের জন্য আলাদা বিজ্ঞপ্তি চালু করলে হাওড় অঞ্চল, পাহাড়ি অঞ্চলেও বেকাররা আবেদন করতে দ্বিধা করবে না।
সকল ইন্ডেক্সধারী পরিবারের পক্ষ থেকে মানবতার মা, জননেত্রী  প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন, আরো আবেদন রইলো মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর কাছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, উপসচিব, কর্মকর্তাগণের কাছে, আরো আকুল আবেদন রইলো এনটিআরসিএ এর চেয়ারম্যান, সচিব, উপসচিব ও কর্মকর্তাদের প্রতি-
২য় ও ৩য় গণবিজ্ঞপ্তির ন্যায় ৭ নং পয়েন্ট বহাল রেখে দ্রুত ইনডেক্সধারীদের জন্য আলাদা গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে আমাদের পরিবারের কাছাকাছি যাওয়ার ব্যবস্থা করলে আমরা আপনাদের প্রতি চির কৃতজ্ঞ থাকবো। আমরা আশা করি আমাদের নিরাশ করবেন না। আমরা আপনাদের জন্য সব সময় দোয়া করি, আপনাদের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করি এবং আজীবন আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবো।
‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।’
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

বাসদ ময়মনসিংহ মহানগর শাখার আয়োজনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত

ইনডেক্সধারীদের জন্য ৭ নং পয়েন্ট বহাল রেখে দ্রুত আবেদনের সুযোগ চাই ও আলাদা গণবিজ্ঞপ্তি চাই

Update Time : ০২:০৪:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ জুন ২০২৩
মোঃ মিজানুর রহমান স্টাফ রিপোর্টার
ইনডেক্সধারী শিক্ষকবৃন্দ বিশেষ করে এনটিআরসিএ এর মাধ্যমে সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকরা আর্থিক অসচ্ছলতা, মানসিক সমস্যা, পারিবারিক বিচ্ছেদসহ বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত। ২০১৬ সাল থেকে এনটিআরসিএ গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক সুপারিশ করে আসছে। ১ম গণবিজ্ঞপ্তিতে উপজেলা ভিত্তিক শিক্ষক সুপারিশ করার ফলে নিজ উপজেলায় শূন্য পদ না থাকায় হাজার হাজার নিবন্ধনধারী বেকারই থেকেছিলো।
২য় ও ৩য় গণবিজ্ঞপ্তিতে মেরিট পজিশন অনুযায়ী জাতীয় পর্যায়ে শিক্ষকদের সুপারিশ করা হয়েছিলো। এনটিআরসিএ এর নিয়োগ পরিপত্র ২০১৫ এর ৭ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী একজন ইনডেক্সধারী শিক্ষক যেকোনো বয়সে পরবর্তী যেকোনো গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের মাধ্যমে মেরিট পজিশন অনুযায়ী সমপদে প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন করতে পারবেন। তাই ২য় ও ৩য় গণবিজ্ঞপ্তিতে অনেক নিবন্ধনধারী নিজ এলাকায় শূন্য পোস্ট না থাকায় বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পাবার জন্য ইচ্ছে করেই দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে আবেদন করে সুপারিশ পেয়েছিলো। কিন্তু হঠাৎ করে ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে ইনডেক্সধারীদের আবেদনের সুযোগ বন্ধ করে দেয়ার ফলে ইনডেক্সধারীদের জীবন বেকারত্বের অভিশাপ থেকেও বেশি ভয়ংকর অভিশাপে পরিণত হয়েছে। স্বল্প বেতনে চাকরি করার কারনে পুরুষ শিক্ষকরা বাড়িতে টাকা পাঠাতে পারে না। এমনকি স্ত্রীকে সাথে এনে রাখতে পারে না। ফলে স্ত্রীর সাথে সম্পর্কের অবনতি ঘটতে থাকে। অনেক সময় এমন সম্পর্কগুলো বিবাহ বিচ্ছেদে রূপ নিচ্ছে। দূরে চাকরি করার কারনে অবিবাহিত পুরুষ শিক্ষকদের কাছে কন্যার মা-বাবা কন্যাকে পাত্রস্থ করে না। দূর দূরান্তে চাকরি করার কারনে অবিবাহিত নারী শিক্ষকদের বয়স বেড়ে যাচ্ছে কিন্তু তাদের বিয়ে হচ্ছে না। ফলে বয়স বেড়ে যাচ্ছে তবুও ব্যাচেলর জীবন যাপন করতে হচ্ছে দূর দূরান্তে চাকরিরত শিক্ষকদের।
বিবাহিত নারী শিক্ষকদের মধ্যে অনেকের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে স্বামী ছেড়ে দূরে চাকরি করার কারনে। এখনো অনেক নারী শিক্ষক আছে যাদের সংসার ভাঙ্গার মতো অবস্থা। নারী শিক্ষকদের নিরাপত্তার অভাব রয়েছে। পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে শিক্ষকরা তাদেরকে সেবা করতে পারে না। পরিবারের মৃত ব্যক্তিকে শেষ দেখাও দেখতে পারে না।
মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষকরা নিজ সন্তানদের মানুষ করা তো দূরের কথা সন্তানের কাছে থাকতে পারে না। সন্তানগুলো হয় বাবার কাছে থাকে না হয় মায়ের কাছে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে সন্তানগুলো বড় হচ্ছে কাজের মহিলাদের কাছে।
৩য় গণবিজ্ঞপ্তিতে কিছু ইনডেক্সধারী শিক্ষক যোগদান না করার কারনে ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের আবেদনের সুযোগ বন্ধ করা হয়েছে। যোগদান বাধ্যতামূলক এবং যোগদান না করলে পূর্বের ইনডেক্স বাতিল হয়ে যাবে এমন শর্ত সাপেক্ষে যদি আবেদন করার সুযোগ দেয়া হতো তাহলেও ইনডেক্সধারীদের সমস্যা অনেকটা দূর হতো।
যেহেতু বদলি একটি জটিল প্রক্রিয়া এবং বদলি চালু হলে সরকারের আর্থিক ক্ষতি হবে, তাই ইনডেক্সধারীদের জন্য আলাদা বিজ্ঞপ্তি দিলে কারো কোনো ক্ষতি হবে না। ইনডেক্সধারীদের আলাদা বিজ্ঞপ্তি দিলে এর কার্যক্রম শেষ করতে খুব বেশি সময় লাগবে না কারণ ইনডেক্সধারীদের পুলিশ ভেরিফিকেশান দরকার নেই।  ইনডেক্সধারীদের শূন্য পোস্টগুলোতে বেকারদের জন্য বিজ্ঞপ্তি দিলে বেকারদেরও উপকার হবে। ইনডেক্সধারীদের জন্য আলাদা বিজ্ঞপ্তি চালু করলে হাওড় অঞ্চল, পাহাড়ি অঞ্চলেও বেকাররা আবেদন করতে দ্বিধা করবে না।
সকল ইন্ডেক্সধারী পরিবারের পক্ষ থেকে মানবতার মা, জননেত্রী  প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন, আরো আবেদন রইলো মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর কাছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, উপসচিব, কর্মকর্তাগণের কাছে, আরো আকুল আবেদন রইলো এনটিআরসিএ এর চেয়ারম্যান, সচিব, উপসচিব ও কর্মকর্তাদের প্রতি-
২য় ও ৩য় গণবিজ্ঞপ্তির ন্যায় ৭ নং পয়েন্ট বহাল রেখে দ্রুত ইনডেক্সধারীদের জন্য আলাদা গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে আমাদের পরিবারের কাছাকাছি যাওয়ার ব্যবস্থা করলে আমরা আপনাদের প্রতি চির কৃতজ্ঞ থাকবো। আমরা আশা করি আমাদের নিরাশ করবেন না। আমরা আপনাদের জন্য সব সময় দোয়া করি, আপনাদের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করি এবং আজীবন আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবো।
‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।’